কখন হোমিওপ্যাথি এবং এলোপ্যাথি চিকিৎসা করবেন?

0
246

কখন হোমিওপ্যাথি এবং এলোপ্যাথি চিকিৎসা করবেন?

জগতে কোন কিছুই পূর্ণাঙ্গ নয়। অনেক ইমার্জেন্সি পরিস্থিতি আছে যেখানে হোমিওপ্যাথি দিয়ে চিকিৎসা করা যায়না। ঠিক একই ভাবে  অনেক ক্রণিক রোগ আছে যেগুলোতে এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় খুব একটা সফলতা পাওয়া যায়না।

যে যেভাবেই বলুক বা ভাবুক এটাই সত্য কথা।

কিছু উদাহরণ দেওয়া যাকঃ

১) এমার্জেন্সি কোন পরিস্থিতি যেখানে এই মুহূর্তে লাইফ সাপোর্ট দরকার হোমিওপ্যাথিতে অনেক ক্ষেত্রেই তা দেওয়া সম্ভব হয় না।

তখন চিকিৎসকের উচিত রোগীকে দ্রুত এমার্জেন্সি আল্লোপথিক ট্রিটমেন্ট এর সাহায্য নিতে উপদেশ দেওয়া।

২) যে রোগ সার্জারি ব্যতিরেকে আরোগ্যের সম্ভাবনা নেই

(যেমন খুব বড় টিউমার, খুব বড় আঁচিল বা অন্য কোনো বড় ধরনের সাইকোটিক গ্রোথ এগুলো খুব বড় হয়ে গেলে সার্জারি ছাড়া হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আরোগ্য হয় না) সেই রোগীকে আটকে না রেখে দ্রুত অ্যালোপথিক তথা সার্জারি চিকিৎসা নেওয়ার উপদেশ দেওয়া।

এছাড়াও স্ব-স্ব ক্ষেত্রে যখন মনে হবে রোগীর আরোগ্য সীমার বাইরে, ইমার্জেন্সি ট্রিটমেন্ট দরকার সেখানে যতদূর সম্ভব দ্রুত রোগীকে এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিতে হবে।

কখন হোমিওপ্যাথি
কখন হোমিওপ্যাথি

৩) যে সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে খুব বড় ধরনের প্যাথলজি আছে এবং চিকিৎসকের যদি মনে হয় তা হোমিওপ্যাথিতে আরোগ্যের সম্ভাবনা নেই তাহলে সেই সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে রোগীকে অ্যালোপ্যাথি ট্রিটমেন্ট নেওয়ার পরামর্শ দিতে হবে।

আবারঃ

১) সাধারণত যেকোন চিররোগ যে রোগে রোগী বহুদিন যাবত ভুগছে এই সমস্ত ক্ষেত্রে এলোপ্যাথিক চিকিৎসকদের উচিত রোগীকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া।

২) কোনো টিউমার আঁচিল বা যেকোনো ধরনের সাইকোটিক গ্রথ যেটির এলোপ্যাথিতে কোন ঔষধজ নিরাময় নেই। বাধ্যতামূলকভাবে সার্জারি করা লাগে। সেসব ক্ষেত্রে রোগ যদি আরোগ্য সীমার ভেতরে থাকে তবে চিকিৎসকের উচিত রোগীকে একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া।

৩) যে কোন প্রকার হাইড্রোসিল, হাইড্রোকেফালাস, হাইড্রোথোরাক্স, ইডিমা, ড্রপসি, প্লুরাল ইফিউশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসাকের উচিত রোগীকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া। কেননা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় এই সমস্ত রোগের এত সুন্দর অপূর্ব আরোগ্যদায়ক চিকিৎসা আছে যা অবাক করার মত।

৪) যে কোন প্রকার পাথরী রোগের অপূর্ব আরোগ্যদায়ক চিকিৎসা হোমিওপ্যাথিতে। কোন প্রকার সার্জারি বা শল্য চিকিৎসার প্রয়োজন নেই শুধুমাত্র হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবনে কিডনি পাথর, পিত্তথলির পাথর, মূত্রথলির পাথর অনায়াসে বের হয়ে যায়। তাই এসব ক্ষেত্রে একজন এ্যালোপ্যাথিক চিকৎসকের উচিত রোগীকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া। পিত্তথলির পাথরি অপারেশন, জরায়ুর টিউমার অপারেশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনেক সময় স্ব স্ব অঙ্গটি সার্জারির মাধ্যমে অপসারণ করা হয়।

কিন্তু আমাদের এটি জেনে রাখা উচিত শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গই সমান দরকারি ও শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। কোন একটি অঙ্গ সার্জারি দ্বারা শরীর থেকে বাদ দেওয়া হলে তার খারাপ প্রভাব আজীবন রোগীকে বহন করতে হয়।

একটি মেশিনের একটি পার্টস বাদ দিলে যেমন সমগ্র মেশিনটিই কিছুটা বিকল হয় মানবশরীরও তেমনি। তাই প্রথমেই সার্জারি নয়)

(তবে পাথর খুব বেশি বড় হয়ে গেলে হোমিওপ্যাথিক ঔষধে সেটি আরোগ্য হয় না। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সার্জারি করাতে হবে)

অর্থাত কখন হোমিওপ্যাথি এবং এলোপ্যাথি চিকিৎসা করতে হবে এই বিষয়ে একটু বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ যোগাসন এর অনুশীলন করুন জীবন বদলাবেই

Previous articleহোমিওপ্যাথিতে পিত্ত পাথরের চিকিৎসা
Next articleব্রেইন স্ট্রোক এর লক্ষণ, কারণ ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
Dr. Dipankar Mondal
হোমিওপ্যাথিক নীতি অনুযায়ী রোগীর সামগ্রীক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দ্বারাই জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। জীবনযাপনের ভুল অভ্যাস থেকে সৃষ্ট রোগ, সংযম ব্যতীত শুধুমাত্র ঔষধ সেবনের দ্বারা প্রতিরোধ বা আরোগ্যের আশা করা বাতুলতা মাত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here