সাধারণত ফোড়ার আকৃতি ও বৈশিষ্ট্যযুক্ত একপ্রকার পচনশীল ক্ষত যাহা চর্মের নিচের তন্ততে প্রকাশ পায় তাকে কার্বাংকল বলে ।স্ট্যাফাইলোকক্কাস নামক এক প্রকার জীবাণুর সংক্রমণ দ্বারা অনেকগুলি লোমকূপেরগোড়ায় অথবা লোম গ্রন্থিতে ইহা প্রকাশ পেয়ে থাকে। কার্বঙ্কল সাধারণত একাধিক ছিদ্র যুক্ত হয়ে থাকে এবং ইহা সাধারণ ফোঁড়া থেকে অধিক বড় আকৃতির হয়।
কার্বংকলকে বিষাক্ত ফোঁড়া, বিষফোঁড়া বা দুষ্ট ব্রণ বলা হয়ে থাকে।
কার্বাংকল এর কারণঃ
সাধারণত যে কোন প্রকার ক্ষত বা পচনশীলতার ন্যায় কাবংকলের ক্ষেত্রেও ভেতরে সিফিলিটিক মায়াজম কে কার্যকর থাকতে দেখা যায়। আর উত্তেজক কারণ হিসেবে স্টাফিলোকাক্কাস অরিয়াস নামক জীবাণু বা এই প্রকৃতির জীবাণুর কথা বলা যায়। সাধারণত জীবনী শক্তি দুর্বল হলে এবং বহু ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীতে এই কার্বাংকল হওয়ার প্রবণতা থাকে।
কঙ্কালের লক্ষণ বা ক্লিনিক্যাল ফিচারঃ
কার্বাংকল সাধারণত দেখতে সাধারণত ফোড়া থেকে অধিক বড় হয়ে থাকে। প্রথমাবস্থায় শক্ত চাকা মত শক্ত মাংসপিণ্ড অনুভূত হয় যা অনেক সময় রক্তিম বা লালচে প্রকৃতির হয়ে থাকে এবং হাত দিলে উত্তাপের অনুভূতি হয়।
সাধারণত কার্বাংকল এ একাধিক ছিদ্র বা মুখ থাকে। এই সমস্ত মুখ দিয়ে পুঁজ বের হয়ে থাকে। নালিক্ষতের ন্যায় ভেতরে বেশ খানিকটা গর্ত হয়ে থাকে ফলে ইহা সহজে শুকাতে চায় না। অনেক ক্ষেত্রে রোগীর ডায়াবেটিস থাকলে ক্ষত সহজে আরোগ্য হতে চায় না।
ফোঁড়ার কারনে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় ও জ্বর দেখা দেয়। রোগী কার্বাংকলে প্রচন্ড জ্বালা-পোড়া অনুভব করে যা সাধারণ ফোঁড়ার থেকে অনেক বেশি।
গভীরতা যুক্ত ক্ষত সহজে না শুকানোর কারণে অনেক ক্ষেত্রে পচনশীলতা দেখা দেয় ও দুর্গন্ধ ছড়ায়।
কার্বাংকল এর ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসাঃ
সাধারণত ক্ষতস্থান সর্বদা যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রান্ত স্থানে যাতে মশা-মাছি ইত্যাদি বসতে না পারে এবং ধুলাবালি থেকে মুক্ত রাখার জন্য আক্রান্ত স্থান বেঁধে দিতে হবে। আক্রান্ত স্থানে যদি গরম সেঁক দিলে রোগী উপশম বোধ করে তবে কাপড়ের কিছু অংশ উষ্ণ গরম জলে ভিজিয়ে হালকা করে সেঁক দিতে হবে।তিসি, ময়দা অথবা নিমপাতার পুলটিস দেওয়া যায় তাতে ফোঁঁড়়া দ্রুত পাকে।
কার্বাংকল এর পরিস্থিতি ও বিষাক্ততার মাত্রা বুঝে দ্রুত অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করতে হবে। অস্ত্রোপচারের পর প্রতিদিন নিয়মিত ড্রেসিং করতে হবে জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে। তবে রোগীর যদি ডায়াবেটিস থাকে তবে অস্ত্রোপচারের পূর্বে অবশ্যই ডায়াবেটিস আয়ত্তের মধ্যে আনতে হবে।
কার্বাংকল এর হোমিও চিকিৎসাঃ
ক্যালেন্ডুলা মাদার টিংচার দ্বারা মলম বা লিনিমেন্ট প্রস্তুত করে কার্বংকলে প্রয়োগে ব্যথা দ্রুত উপকার হয়। এছাড়া কনস্টিটিউশন অনুসারে বেলেডোনা ,সাইলিশিয়া, মার্কসল, আর্সেনিক, এসিড নাইট্রিকাম, ইত্যাদি ঔষধ ব্যবহার করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ Epistaxis হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা