কিডনিতে পাথর হলে অনেকেই দুধ খাওয়া যাবে কিনা এই নিয়ে সন্দেহে থাকেন। বিষয়টি বুঝতে আমাদের প্রথমে জানতে হবে কিডনিতে চার প্রকারের পাথর হয়ে থাকে।
১) ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোনঃ
২) ক্যালসিয়াম ফসফেট স্টোনঃ
৩) ইউরিক অ্যাসিড স্টোনঃ
৪) সিস্টিন স্টোনঃ
এর ভেতরে ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্ট্রোনই সবথেকে সাধারণ শ্রেণীর স্টোন যা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ লোকের হয়ে থাকে। আর বাকি 20% থেকে 30% ক্ষেত্রে অন্যান্য শ্রেণীর পাথর হতে দেখা যায়।
ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোনঃ এই ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথরের ক্ষেত্রে পরিমিত মাত্রায় দুধ খেলে উপকার হয়। কেননা দুধে থাকা ক্যালসিয়াম, অক্সালেটকে কিডনিতে ক্যালসিয়ামের সাথে আবদ্ধ হতে বাধা দেয়। এবং এই ক্যালসিয়াম খাবারের ভিতরে থাকা অক্সালেট কে পায়খানার সাথে বের হয়ে যেতে সহায়তা করে। এক্ষেত্রে পরিণত পরিমাণে বা দিনে এক গ্লাস পরিমাণ দুধ পান করা যেতে পারে। (শসা কিডনি থেকে বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সহায়তা করেন। তাই কিডনি পাথরের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরা নিয়মিত শসা খেতে পারেন।)
ক্যালসিয়াম ফসফেট স্টোনঃ তবে ক্যালসিয়াম ফসফেট পাথরের ক্ষেত্রে দুধ সেবন করা কমাতে হবে। কেননা দুধে থাকা ফসফেট কিডনিতে ফসফেট পাথর গঠনে সহায়তা করে।
ইউরিক অ্যাসিড স্টোনঃ ইউরিক অ্যাসিড স্টোন এর ক্ষেত্রে দুধ সেবন করা নিরাপদ। কেননা দুধ প্রস্রাবকে অ্যালকালাইজিং করে। ইউরিক অ্যাসিড স্টোন এর ক্ষেত্রে লবণ ও প্রাণিজ প্রোটিন কমাতে হবে।
সিস্টিন স্টোনঃ সিস্টিন স্টোন খুব বেড়ালো প্রায় ১% থেকে ২% ক্ষেত্রে দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বংশগত কারণ জড়িত থাকে। এক্ষেত্রে দুধ খেতে কোন বাধা নেই। তবে দুধ পাথর তৈরি হওয়াকে প্রতিরোধ করে না।
তাহলে উপরের আলোচনাতে আমরা দেখতে পেলাম শুধুমাত্র ক্যালসিয়াম ফসফেট স্টোন এর ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র দুধের ব্যবহার কমাতে হবে। বাকি সকল ক্ষেত্রেই দুধ খাওয়া যাবে। এবং ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোন এর ক্ষেত্রে দুধ পজিটিভ ভূমিকা পালন করে।
আমাদের রাখতে হবে কিডনির ক্ষেত্রে পাথরগুলো সাধারণত বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তাই পাথরের গঠন নির্ণয় করে চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
সাধারণ টিপসঃ এই টিপসটি যেকোনো ধরনের কিডনিতে পাথরের রোগীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিডনিতে পাথরের রোগী প্রতিদিন নিয়মিত কম করে হলেও তিন থেকে চার লিটার জল পান করবে। এর ফলে প্রস্রাবের PH নিয়ন্ত্রিত হবে। প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হবে তাহলে প্রস্রাব PH এ ভারসাম্য বজায় থাকবে।
কিডনিতে পাথরের ধরন জানতে যে ব্যাথা গুলো করা হয়ে থাকে তাহলঃ
Urine pH test, Stone analysis, 24-hours irine and blood test, CT scan ইত্যাদি প্যাথলজিক্যাল টেস্ট গুলোর ভেতর থেকে পরিস্থিতির জনযে কোকোন টেস্ট করলেই কিডনিতে পাথরের ধরন জানা যাবে।
প্রসাবের সঙ্গে পাথর বের হলে সেই পাথর সংরক্ষণ করা যায় এবং পরিস্থিতি বিশেষ
ল্যাবে টেস্ট করে পাথরের গঠন সম্পর্কে জানা যায় ।
আজ এই পর্যন্ত থাকলো।
সকলের জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।
ডা. দীপংকর মন্ডল
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ
৩০.০৩.২০২৬