আমরা কেন ও কিভাবে রোগাক্রান্ত হই?

0
141

আমরা কেন ও কিভাবে রোগাক্রান্ত হই এই ব্যাপারে কিছু সূক্ষ আলোচনা আজকের পোষ্টে করব। রোগের মূল কারণ বুঝতে হলে সূক্ষ এই ব্যাপারগুলো অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে।

আমরা  কিভাবে রোগাক্রান্ত হই?

হোমিওপ্যাথি হ্যানিম্যান আবিষ্কৃত একটি অত্যাধুনিক এবং বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিশেষ কোন রোগকে চিকিৎসা করা হয় না। সমস্ত লক্ষণ সংগ্রহ পূর্বক একমাত্র রোগীর চিকিৎসা করা হয়ে থাকে এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে।

মহাত্মা স্যামুয়েল হ্যানিম্যান অর্গানন গ্রন্থে দেখালেন যে রোগ মূলত আর কিছুই নয়, আমাদের জীবনীশক্তিরই অসুস্থার নামান্তর মাত্র। বাহ্যিক রোগোৎপাদনকারী যতরকম অশুভ শক্তি বিরাজ করুক না কেন আমাদের জীবনীশক্তি যদি ওই রোগোৎপাদনকারী অশুভ শক্তি দ্বারা উৎপীড়িত হওয়ার মত যথেষ্ট দুর্বল না হয় তবে আমরা রোগাক্রান্ত হই না।
কিভাবে রোগাক্রান্ত হই ছবি
কিভাবে রোগাক্রান্ত হই ছবি
আমাদের জীবনী শক্তি যদি যথেষ্ট সুস্থ সবল ও শক্তিশালী হয়, তাহলে বাইরের রোগ জীবাণু বহনকারী শক্তি দ্বারা আমাদের জীবনীশক্তি সহজে আক্রান্ত হয় না। আমরা প্রায়ই দেখি অনেকের চাউলের ধুলা, ফুলের রেণু, আসবাবপত্রের ধুলা ইত্যাদি থেকে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বা হাঁচি উৎপাদিত হয়। এক্ষেত্রে ক্ষতিকর রোগোৎপাদনকারী অশুভ শক্তি হিসেবে দেখা হয়  ওই সমস্ত উপাদানকে, যে সমস্ত উপাদান থেকে আমরা অসুস্থ হই। তবে যদি আমরা আরেকটু গভীরভাবে ভেবে দেখি তাহলে আমরা দেখব চাউলের গুড়া, ধুলা, ফুলের রেণুতে নিশ্চয়ই রোগোৎপাদনকারী ক্ষমতা আছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সবাই কিন্তু ওই রোগোৎপাদনরুপ কারণ দ্বারা, ঐ একই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেনা ।
অর্থাৎ এতে কি আমরা এটাই বুঝি না, যে আমাদের যাদের জীবনীশক্তি রোগোৎপাদক স্বরূপ ঐ কারণ দ্বারা অভিভূত হওয়ার মতো দুর্বলতা ও আকাঙ্ক্ষা থাকে শুধুমাত্র তারাই ওই রোগোৎপাদক কারণ দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়ে থাকে। কিন্তু যাদের জীবনীশক্তি সবল তারা ঐ সকল রোগোৎপাদক কারণ দ্বারা আক্রান্ত হয় না।
এই কারণেই মহাত্মা হ্যানিম্যান বললেন, যেহেতু অসুস্থ হয় জীবনীশক্তি তাই চিকিৎসা হবে জীবনীশক্তির। আমাদের জীবনীশক্তি যদি সুস্থ থাকে তাহলে ঐ রোগোৎপাদক কারণ দ্বারা আমরা আক্রান্ত হবো না। অথবা যদি আক্রান্ত হয়েও থাকি তাহলেও জীবনীশক্তির চিকিৎসা হলে সেই রোগাক্রান্ত অবস্থা দূরীভূত হবে।
এই কারণেই হোমিওপ্যাথিতে বাহ্য কোন রোগের কারণ জীবাণু বা বীজাণু কে রোগের স্বরূপ বলে চিহ্নিত করা হয় না বা একজন ব্যক্তির নির্দিষ্ট কোন অঙ্গ রোগাক্রান্ত হলেও সেই অঙ্গের চিকিৎসা করা হয় না। সামগ্রিকভাবে রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। রোগীর জীবনীশক্তির চিকিৎসা করা হয়, রোগীর জীবনীশক্তি সুস্থ হলে রোগী সুস্থ হবে। রোগী সুস্থ হলে রোগীর অসুস্থ অঙ্গ সুস্থ হবে। ঠিক এভাবেই জীবনীশক্তির চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীর দেহে প্রকাশিত রোগ লক্ষণ কে দূরীভূত করা হয়ে থাকে।
Previous articleডায়াবেটিক ফুট ও তার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
Next articleমহামারী ও হোমিওপ্যাথি
Dr. Dipankar Mondal
হোমিওপ্যাথিক নীতি অনুযায়ী রোগীর সামগ্রীক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দ্বারাই জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। জীবনযাপনের ভুল অভ্যাস থেকে সৃষ্ট রোগ, সংযম ব্যতীত শুধুমাত্র ঔষধ সেবনের দ্বারা প্রতিরোধ বা আরোগ্যের আশা করা বাতুলতা মাত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here