আজকের আলোচনাতে আমি বিভিন্ন প্রকার ক্ষতের সংজ্ঞা ও ক্ষতের শ্রেণীবিভাগ নিয়ে আলোচনা করব। চলুন বিস্তারিত আলোচনায় প্রবেশ করা যাক।
ক্ষতের সংজ্ঞাঃ
শরীরের চামড়া বা তন্তুকোষ কোন প্রকার আঘাত জনিত কারণ তারা যদি বিচ্ছিন্ন হয় বা ইহার অবিচ্ছেদ্যতা নষ্ট হয় তখন তাকে ক্ষত বলে। এছাড়াও জীবাণুর সংক্রমণের কারণ হেতু রোগগ্রস্ত অঙ্গের চর্মের উপরিভাগ নষ্ট হয়ে তন্তুক্ষয় হলে তাকে ক্ষত বলে।মোটকথা যেকোনো কারণে চর্মের পরিভাগের তন্তু ক্ষয় হয়ে সেখানে গর্ত তৈরি হলে তাকে ক্ষত বলে। অগ্নিসংযোগ দ্বারা পুড়ে গেলেও ক্ষত সৃষ্টি হয়ে থাকে।
বিভিন্ন প্রকার ক্ষতের শ্রেণীবিভাগঃ
ক্ষতের শ্রেণীবিভাগঃ ক্ষতকে সাধারণভাবে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
১) উন্মুক্ত ক্ষত/Open Wounds.
২) বদ্ধ ক্ষত/Closed Wounds.
৩) বিষাক্ত ক্ষত/Poisonous Wounds.
উন্মুক্ত ক্ষতঃ খোলা ক্ষত বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে যেমন:
১) এব্রেসানঃ আঘাতাদি বা ঘর্ষণ লেগে চর্মের উপরিভাগের ছাল উঠে যে ক্ষত হয় তাকে এব্রেসান বলে।
২) ল্যাসারেটেড উন্ডঃ ভোতা অস্ত্রের আঘাতে থেঁতলানো ক্ষতকে ল্যাসারেটেড উন্ড বলে।
৩) ইনসাইজড উন্ডঃ ধারালো অস্ত্র দ্বারা কেটে গিয়ে যে ক্ষত বা জখম হয় তাকে ইনসাইজড উন্ড বলে।
৪) পাংচার্ড পেনিট্রটিং উন্ডঃ সূচালো বস্তু দ্বারা গভীর ক্ষত বা গর্ত হলে তাকে পাংচার্ড পেনিট্রেটিং উন্ড বলে।
৫) গান শট উন্ডঃ বন্দুকের গুলি লেগে যে জখম হয় তাকে গান শট উন্ড বলে।
বদ্ধ ক্ষতঃ এই প্রকার ক্ষতের দ্বারা চর্মের অভ্যন্তরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চর্মের অভ্যন্তরস্থ কৌশিক শিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই স্থানে রক্ত জমাট বেঁধে কালশিটে পড়ে। অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে সাধারণত চর্মের নিম্নভাগে রক্ত জমাট বেঁধে ক্ষত তৈরি হয়।
বিষাক্ত ক্ষতঃ বিভিন্ন প্রকার বিষাক্ত প্রাণী কুকুর, বিড়াল, সর্প, বিছা ইত্যাদির দংশনের দ্বারা যে ক্ষতের সৃষ্টি হয় তাকে বিষাক্ত ক্ষত বা poisonous wounds বলে। এই প্রকার ক্ষত খুবই মারাত্মক ও প্রাণঘাতি। কেননা এই ক্ষত এর মাধ্যমে সমস্ত শরীরে বিষ প্রবাহিত হয়ে থাকে।