গ্যাংলিওন এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

0
123

গ্যাংলিওন এর সংজ্ঞাঃ 

সাধারণত গ্যাংলিওন বা নাড়ীগ্রন্থি হল একপ্রকার ক্যান্সার বিহীন সিস্ট, যার ভেতর জেলির মত তরল পদার্থ দ্বারা পূর্ণ থাকে। এটিকে সাইনোভিয়াল হার্নিয়া বা সাইনোভিয়াল সিস্ট বলা হয়।

এই গ্যাংলিওন সাধারণত ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সের ভেতর হয়ে থাকে। এটি সাধারণত টেন্ডনের উপরে ও চর্মের নিচে হয়ে থাকে।
যে ক্যাপসুল দ্বারা সন্ধিস্থল আবৃত থাকে সেই স্থানেও ইহা বিকাশ লাভ করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নাড়ীগ্রন্থি গুলি হাত বা হাতের কব্জিতে হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে এথলেট, দৌড়বিদ, রানার প্রভৃতি যাদের পায়ের ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে তাদের ক্ষেত্রে পায়ে নাড়ীগ্রন্থি বিকাশলাভ করতে দেখা যায়।

নাড়ীগ্রন্থি এর কারণঃ

হাত, হাতের কব্জি এবং পায়ের অতিরিক্ত ব্যবহার, বারবার আঘাত ও আঘাতের পুনরাবৃত্তির কারণে আমাদের টেন্ডনের উপরের মেমব্রেনের পাতলা আবরণী ছিড়ে গেলে, ভেতরে থাকা তরল পদার্থ বের হয়ে পড়ে। এবং তা একটি থলিতে জমা হয় এবং ফুলে ওঠে। এই প্রকারে একটি নাড়ীগ্রন্থি তৈরি হয়।
গ্যাংলিওন ছবি
গ্যাংলিওন ছবি

নাড়ীগ্রন্থি এর উপসর্গঃ

সাধারণত গ্যাংলিওনগুলি বেদনাহীন হয়ে থাকে। তবে নাড়ীগ্রন্থি এর ফলে আক্রান্ত অঙ্গ নাড়াচাড়া করতে অসুবিধা হতে পারে। আক্রান্ত স্থান কখনোবা ইচ্ছামত পরিচালনা করতে অসুবিধা সৃষ্টি হতে পারে। ত্বকের পৃষ্ঠের নাড়ীগ্রন্থি সাধারণত ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করতে দেখা যায়। তবে প্রায় ক্ষেত্রেই গ্যাংলিওন সৃষ্টি হওয়ার প্রধান কারণ থাকে আঘাত লেগে বা অন্য যেকোনো কারণে টেন্ডন এর উপরের মেমব্রেনের পাতলা আবরণী ছিড়ে যাওয়া। এবং একটা পর্যায়ে এই নাড়ীগ্রন্থি গুলি আমাদের কাছে তখনই চিহ্নিত হয় যখন এটি বড় হতে হতে কোন স্নায়ুর ওপর চাপ প্রদান করে। তারপরে আস্তে আস্তে এটি স্পষ্ট দৃশ্যমান হয়।

গ্যাংলিওন এর ডায়াগনসিসঃ

নিজস্ব প্রচেষ্টায় শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তনের উপলব্ধি বা পরীক্ষা দ্বারা এটি আমাদের কাছে স্পষ্ঠ হয়। এছাড়া অন্য যে সমস্ত প্যাথলজিক্যাল টেস্ট বা পরীক্ষা দ্বারা গ্যাংগলিয়ন ডায়াগনসিস করা হয় তা হলো-
১) এক্সরে।
২) আল্ট্রাসাউন্ড এবং চৌম্বকীয় অনুরণন ইমেজিং (এম আর আই) ।
৩) সিস্ট থেকে ফ্লুইড আলাদা করে প্যাথলজিক্যাল টেস্ট দ্বারা মূল্যায়ন করে।
গ্যাংলিওন এর চিকিৎসাঃ হোমিওপ্যাথিক বা সদৃশ বিধান অনুসারে লক্ষণ সাদৃশ্যে চিকিৎসা করা হলে এই রোগ আরোগ্য হয়।
সার্জারির মাধ্যমেও নাড়ীগ্রন্থি অপসারণ করা যায়, তবে এ ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার দ্বারা নাড়ীগ্রন্থি সম্পূর্ণরূপে অপসারণ করতে না পারলে এটি পুনরায় ফিরে আসতে পারে।
Previous articleঅস্থিভঙ্গের লক্ষণ জটিলতা এবং ব্যবস্থাপনা
Next articleহোমিওপ্যাথিক ঔষধের শক্তিককরন পদ্ধতি
Dr. Dipankar Mondal
হোমিওপ্যাথিক নীতি অনুযায়ী রোগীর সামগ্রীক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দ্বারাই জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। জীবনযাপনের ভুল অভ্যাস থেকে সৃষ্ট রোগ, সংযম ব্যতীত শুধুমাত্র ঔষধ সেবনের দ্বারা প্রতিরোধ বা আরোগ্যের আশা করা বাতুলতা মাত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here