প্রাথমিক আলোচনাঃ শীতকালে ঠোঁট ফাটে(Lip crack) কেন? এই বিষয়টি সম্বন্ধে জানা থাকলে এবং ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা সম্বন্ধে পূর্ব ধারনা থাকলে আমরা শীতকালে ঠোঁট ফাটার এই সমস্যাকে মোকাবিলা করতে পারি।
শীতকালে ঠান্ডা বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আমাদের শরীরের ত্বক ও ঠোট ফেটে যায়। মূলত এই সময় শুষ্ক ও শীতল বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ কম থাকে এবং এইরকম আবহাওয়ার প্রভাবে আমাদের ঠোঁট ফেটে যায়। ঠোঁট ফাটা শুধু শারীরিক কষ্টের কারণ তৈরি করে তা নয়, এটি আমাদের মুখের সৌন্দর্যকেও প্রভাবিত করে থাকে। তাই এই ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধের উপায় বিষয়ে আজকের আলোচনাতে আমি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস জানাব।
আজকের আর্টিকেলে আমি যে সকল বিষয়ের উল্লেখ করবো- শীতে ঠোঁট ফাটার কারণ, ঠোঁট ফাটার লক্ষণ, ঠোঁট ফাটার জটিলতা, ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধের উপায় ইত্যাদি। এছাড়াও ঠোঁট ফাটার চিকিৎসার বিষয়েও আমি আলোচনা করব।
শীতকালে ঠোঁট ফাটার কারণঃ
মোটা দাগে তিনটি কারণে মূলত শীতকালে আমাদের ঠোঁট ফেটে থাকে। বিষয়টি আলোচনা করা যাক।
শীতের শুষ্ক শীতল বাতাসে জলীয় ভাব কম থাকে বলে এই বায়ুর জলীয়ভাব শুষে নেওয়ার ক্ষমতা থাকে প্রবল। এই কারণে ঠোঁট হোক বা ত্বক বা ভেজা কাপড় এই সকল বস্তু থেকে দ্রুত পানি শুষে নেওয়ার ক্ষমতা থাকে শীতকালের শুষ্ক বাতাসের। এর ফলে আমাদের ঠোঁটের আদ্রতা বাতাস শুষে নেয় এবং আমাদের ঠোঁট শুকিয়ে যায়। এছাড়া আমাদের ঠোঁটে ভার্মিলিয়ন বর্ডার(Vermilion border- উপরের ঠোটের উপরের দিকে এবং নিচের ঠোঁটের নিচের দিকের উঁচু ফাঁপা যে রেখাংশ) এর নিচের অংশে কোন সিবাসিয়াস গ্লান্ড এবং হেয়ার ফলিকল থাকে না। এই অংশে কোন ঘর্মগ্রন্থিও নেই। এবং শরীরের অন্য অংশের তুলনায় এই অঞ্চলে তৈল গ্রন্থির সংখ্যাও পরিমাণে খুব কম। ফলে ঠোঁট দ্রুত শুকিয়ে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয় শীতের ঠান্ডা বাতাসে।
![ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ](https://www.iteachhealth.com/storage/2024/12/ঠোঁট-ফাটা-প্রতিরোধ-1.webp)
এছাড়া আরো একটি বিষয় এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে শীতকালে যেমন বাইরের আবহাওয়া প্রচন্ড ঠান্ডা, তদ্রুপ আমাদের শরীরের ভেতরের অভ্যন্তর ভাগটা তেমনি প্রচণ্ড পরিমাণে গরম থাকে। এই শরীর অভ্যন্তরের অত্যাধিক গরমের উত্তাপ এবং বাইরের শুষ্ক আবহাওয়ার আর্দ্রতা শুষে নেওয়া, তার সাথে সাথে ঠোঁটের অঞ্চলে ঘর্মগ্রন্থি বা তৈল গ্রন্থির অভাব, প্রধানত এই তিনটি কারণ থেকেই শীতকালে মূলত আমাদের ঠোঁট ফেটে থাকে।
এছাড়াও আমাদের অনেকের জিহ্বার সাহায্যে মুখের লালা দিয়ে ঠোঁট ভেজানোর অভ্যাস থাকে। এর ফলে সাময়িক একটু উপাশম বোধ হলেও পরিনামে এটি মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। জিব্বা দিয়ে ঘন ঘন ঠোঁট চাটলে ঠোঁট আরও দ্রুত শুকিয়ে যায় এবং ঠোঁট ফেটে যায়। লালায় থাকা এনজাইম ঠোঁটের ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এবং মুখের লালা দ্বারা ঠোঁট ভিজালে ঠোঁটে তৈরি হওয়া প্রাকৃতিক তৈলাক্ততা নষ্ট হয়।
ঠোঁট ফাটার লক্ষণঃ
ঠোঁট ফেটে গেলে সাধারণত তা আমাদের চোখেই দৃশ্যমান হয়। এছাড়াও ফেটে যাওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ হতে পারে বা ঠোঁটের ব্যবহার কষ্টকর পারে। অনেক সময় ঠোঁটে ব্যথা তৈরি হয়ে থাকে। কখনো কখনো ঠোঁটের থেকে খোসা উঠতে পারে। এবং হাত দিলে তখন ঠোঁটে একটা খসখসে ভাব অনুভূত হয়। উপরন্ত ঠোঁটের সৌন্দর্যের উপরেও ব্যাপক পড়ে থাকে।
ঠোঁট ফাটার জটিলতাঃ
ঠোঁট ফাটা একটি সাধারন সমস্যা এবং আমাদের প্রায় সকলের ক্ষেত্রে এটি ঘটে থাকে। সাধারণত ঘরোয়া প্রতিকার দ্বারাই এটির সমাধান করা যায়। তাই এটি নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে সামান্য কিছু ক্ষেত্রে এটি জটিলতা তৈরি করতে পারে।
যেমন ঠোঁটফাটা গুরুতর হলে সেখান থেকে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ফাংগাল ইনফেকশন হতে পারে। ঠোঁট ফাটার কারণে ঠোঁটের ব্যবহার করা কষ্টকর হয় এবং অনেক সময় প্রদাহ এবং ফুলে ওঠার মতো লক্ষণও দেখা যেতে পারে। এবং ক্রনিক আকারে দীর্ঘদিন যাবত এই ঠোঁটফাটা থাকলে অনেক সময় ঠোঁটে কালচে দাগ পড়তে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটি খাওয়া বা পান করা এবং কথা বলায় অস্বস্তির সৃষ্টি করে থাকে। এবং সতর্ক থাকতে হবে, কিছু ক্ষেত্রে ঠোঁটের কোন রোগ, বিশেষত চর্মরোগ বা সোরাইসিস জাতীয় একজিমার কারণেও ঠোঁট ফাটতে পারে।
ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধের উপায়ঃ
ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ করতে এবং ঠোঁটের যত্ন নিতে কিছু সচেতনামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
১) এক্সফলিয়েট করুনঃ কোন নরম টুথব্রাশ বা কাপড়ের ন্যাকড়া হালকা করে ভিজিয়ে নিয়ে সেটি আলতো করে ঠোটের উপর ঘষে পরিষ্কার করে নিলে ঠোটের মৃত কোষ গুলো দূর হয়। এই ক্ষেত্রে কিছু প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান যেমন মধু বা দুধের সর ইত্যাদি ও ব্যবহার করা যেতে পারে। সপ্তাহে অন্তত একবার কি দুবার নিয়মিত এভাবে ঠোঁটের যত্ন নিলে ঠোঁটের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং ঠোঁট ফাটার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।
২) জিহবা দিয়ে চাটবেন নাঃ ঠোঁট কখনো জিহ্বা দিয়ে চেটে ভেজানো উচিত নয়। এর ফলে মুখের লালায় থাকা এনজাইম দ্বারা ঠোঁটের ক্ষতি হয়।
৩) পর্যাপ্ত পরিমাণে জলপান করুনঃ পর্যাপ্ত জল পান করলে ডিহাইড্রেশন হবে না। তার ফলে ঠোঁটের অঞ্চলে একটা আদ্র বা ভেজা ভাব থাকবে। শীতকালে আমরা অনেকেই জল পানের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে থাকি। এটি না করে অবশ্যই আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা উচিত।
৪) লিপবাম ব্যবহার করুনঃ বিভিন্ন প্রকার ঠোঁটের লিপজেল বা লিপবাম ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণত দেড় থেকে দুই ঘন্টা অন্তর অন্তর লিপজেল ঠোঁটে লাগাতে থাকলে ঠোঁট ফাটবে না। আহার করার শেষে এবং হাতমুখ ধোয়ার পরে অবশ্যই লিপজেল লাগিয়ে নিতে ভুলবেন না। এটি অনেক ক্ষেত্রে সানস্ক্রিনের কাজও করে থাকে। অর্থাৎ সূর্যের আলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ঠোঁটকে রক্ষা করে থাকে।
৫) ঠোঁটের স্ক্রাবার এবং ক্রিমের ব্যবহারঃ আমরা অনেক সময় মুখে ব্যবহার করার জন্য যে ক্রিম বা স্ক্রাবার ব্যবহার করে থাকি সেটি ঠোটে লাগিয়ে থাকি। কিন্তু এটি ঠিক নয়।
ঠোঁটে লাগানোর জন্য অবশ্যই ঠোটের উপযোগী ক্রিম বা স্ক্রাবার ব্যবহার করুন। অনেক সময় ক্রিমের পরিবর্তে আমরা বাড়িতে তৈরি প্রাকৃতিক স্ক্রাবার ব্যবহার করতে পারি। মধু, নারিকেল তেল ও চিনি একত্রে মিশিয়ে ন্যাচারাল স্ক্রাবার তৈরি করে তা ঠোঁটে লাগানো যেতে পারে। তবে এই ন্যাচারাল স্ক্রাবার তৈরীর ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে, ব্যবহৃত উপাদান গুলো যেন নির্ভেজাল হয়।
৬) ধূমপান পরিহার করুনঃ বিড়ি বা সিগারেট সর্বাঙ্গীণ স্বাস্থ্যের সাথে সাথে ঠোঁটের জন্যও মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। বিড়ি বা সিগারেটে থাকা নিকোটিন ঠোঁটের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে এবং ঠোঁটফাটা বাড়িয়ে দেয়। ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধে ধুমপান পরিহার করা উচিত।
ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ করতে নিয়মিত ময়শ্চারাইজার লাগানোর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন এবং সুষম খাদ্য আহার করুন। যতটা সম্ভব শুষ্ক বাতাস থেকে নিজেকে রক্ষা করে চলুন। নিয়মিত ঠোঁটের যত্ন নিন।
ঠোঁট ফাটার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
যেহেতু ঘরোয়া প্রতিকার দ্বারাই সাধারণ ঠোঁট ফাটা কে প্রতিরোধ এবং আরোগ্য করা যায় তাই এক্ষেত্রে সাধারণত কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। তবে যদি ঠোঁটফাটা জটিল ও গুরুতর প্রকৃতির হয়ে থাকে এবং ঠোঁটে প্রদাহ ও বেদনা তৈরি হয় তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়াও ঠোঁটের কোণে ঘা থাকলে এবং তা দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকলে অবশ্যই এর কারণ নির্ণয় করে যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
ঠোঁট ফাটার খুব ভালো হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা রয়েছে। যাদের ঠোঁট মারাত্মকভাবে ফেটে যায় এমনকি ঠোঁটের গলিতে(গালচি) ফাটা থাকে এইসব ক্ষেত্রে খুব অভাবনীয় সফলতা পাওয়া যায় হোমিওপ্যাথিতে। আমি আজকে এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ঠোঁট ফাটার উপর কার্যকারী ঔষধ সম্বন্ধে আলোচনা করব। যদিও ঠোঁট ফাটা বা যে কোনো রোগের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিতে কোন বিশেষ ঔষধ হয় না। লক্ষণ বিবেচনায় ঔষধ প্রয়োগ করতে হয়। আমি এখানে বিশেষ কয়েকটি ওষুধের নাম উল্লেখ করছি এগুলো রোগীর লক্ষণের সাথে মিলে কিনা মিলিয়ে দেখে তারপর রোগীকে প্রয়োগ করবেন।
কন্ডুরাঙ্গোঃ কুন্ডুরাঙ্গ একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ঠোঁট ফাটার জন্য। এটি ৩০ শক্তিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর সঙ্গে সঙ্গে কন্ডুরাঙ্গ মাদার টিংচার ঔষধটিও জলে সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করা যেতে পারে। এমনকি ঠোঁটের কোণের ফাটা ঘাও কন্ডুরাঙ্গ ওষুধটি খুব সুন্দরভাবে আরোগ্য করে দিতে পারে।
পেট্রোলিয়ামঃ শীতকালে ঠোঁট ফেটে যাওয়ার উপর পেট্রোলিয়াম একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ। তবে নজর রাখতে হবে পেট্রোলিয়াম ঔষধটির অন্যান্য লক্ষণের সঙ্গে মিল রেখে ওষুধটি প্রয়োগ করা যায় কিনা। এটি সাধারণত ৩০ বা ২০০ শক্তিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। পেট্রোলিয়াম ঔষধটি ঠোঁট এবং গোড়ালি ফাটার উপরেও খুব সুন্দর কাজ করে থাকে।
অ্যাসিড নাইট্রিকঃ সাধারণত ঠোঁটের কোনায় যদি কারো ফাঁটা থাকে সেই ক্ষেত্রে এসিড নাইট্রিক ঔষধটি বেশি উপযোগী হয়। এই ঔষধের রোগীদের সাধারণত প্রস্রাবে প্রচন্ড পরিমাণে দুর্গন্ধ থাকতে দেখা যায়। অ্যাসিড নাইট্রিক সাধারণত ঠোঁটের, চোখের, কানের ইত্যাদি চর্মের সন্ধিস্থলের ফাটা তে লক্ষণ সাদৃশ্য থাকলে প্রয়োগ করা যায়। এসিড নাইট্রিক পারদের দোষ নষ্ট করে থাকে এবং এটি একটি রক্তস্রাব প্রবন ঔষধ।
নেট্রাম মিউরঃ ঠোঁট ফাটা রোগীর ক্ষেত্রে ধাতুগত লক্ষণের দিকে নজর রেখেই নেট্রাম মিউর ঔষধটি প্রয়োগ করতে হয়। নেট্রাম মিউর ঔষধটিতে সাধারণত ঠোঁটের মাঝ বরাবর বড় ধরনের ফাঁটা থাকতে দেখা যায়। এন্টিম ক্রুড ওষুধ টিতেও অনেক সময় ঠোঁটের মাঝে ফাটা থাকে। নেট্রাম মিউর ঔষধের রোগীদের অনেক সময় রক্তস্বল্পতা থাকতে দেখা যায়।
গ্রাফাইটিসঃ যে কোন প্রকার ফাটা ঘায়ের উপর গ্রাফাইটিস খুব সুন্দর কাজ করে থাকে। রোগীর ধাতু গত লক্ষণ এর সাথে মিল থাকলে গ্রাফাইটিস ঔষধটি ঠোঁট ফাটার উপর সুন্দর কাজ করে থাকে।
সালফারঃ সালফার ওষুধটি ধাতুগত লক্ষণ বিবেচনাতেই প্রয়োগ করা উচিত। এই ওষুধটি চর্ম রোগের উপরে খুব সুন্দর কাজ করে থাকে কেননা এটি একটি এন্টিসোরিক ঔষধ। লক্ষণ সাদৃশ্য থাকলে ঠোঁটের যেকোনো প্রকার চর্ম রোগ বা ঠোঁট ফাটার উপর এটি খুব সুন্দর আরোগ্যমুখী ক্রিয়া করে থাকে।
বাহ্য প্রয়োগঃ এখন আমি দুইটি গুরুত্বপূর্ণ হোমিওপ্যাথিক ঔষধের কথা বলব যার ‘মাদার টিংচার‘ ভেসলিন বা নারিকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ করা যাবে।
সেই ঔষধ দুটি হল-
Condurango মাদার টিংচার এবং বুচি বীজ থেকে তৈরি Psoralea corylifolia মাদার টিংচার। সম্ভব হলে Condurango মাদার টিংচার ঔষধটির দু চার ফোটা পরিমাণ পাঁচ গ্রাম ভেসেলিনের সঙ্গে মিশিয়ে অথবা নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে দ্রুত ঠোঁটফাটা কমে যাবে। এই ওষুধটি না পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে Psoralea corylifolia মাদার টিংচার ঔষধটিও ওই একই নিয়মে ভ্যাসলিন অথবা নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালেও ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ভালো কাজ পাওয়া যাবে। যে কোন সুস্থ ব্যক্তিও শীতের শুরু থেকে এভাবে এই বাহ্য প্রয়োগের ওষুধ দুটি ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত এইভাবে ঔষধ দুটির বাজ্যিক ভাবে ব্যবহার করে গেলে শীতকালে ঠোঁট ফাটবে না। সম্ভব হলে এর সাথে সাথে লক্ষণ মিলিয়ে অভ্যান্তরীণ ভাবে শক্তিকৃত হোমিপ্যাথিক ঔষধ সেবন করতে হবে।
শেষ কথাঃ আজকের আলোচনা থেকে আমরা ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ সহ ঠোট ফাটার কারণ, লক্ষণ, জটিলতা ও চিকিৎসা বিষয়ক আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বন্ধে জেনেছি। ঠোঁট ফাটা রোগীদের জন্য বিশেষ দুটি ঔষধের কথা বলেছি যা নির্দিষ্ট মাত্রা ও পরিমাণে ঠোটে নিয়মিত ব্যবহার করলে ঠোঁট ফাটার ক্ষেত্রে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
মূলত ঠোঁট ফাটা একটি সাধারন সমস্যা হলেও তা যেন গুরুতর পর্যায়ে না যায় তার জন্য অবশ্যই আমাদের সচেতন থাকতে হবে। তবে ঠোঁটফাটা দীর্ঘস্থায়ী হলে এবং তা কোনভাবেই আরোগ্য না হতে চাইলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে ঠোঁট গোলাপি করার উপায়
ডা. দীপংকর মন্ডল
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ
এই লেখাটি আপনার উপকারে এসেছে কি? আরো নতুন লেখা তৈরির জন্য আর্থিকভাবে অবদান রাখতে পারেন। যেকোন পরিমাণ আর্থিক কন্ট্রিবিউশন করতে নীচের ডোনেট বাটন ব্যাবহার করুন।
[custom_donation]