ডায়াস্কোরিয়া হোমিও ঔষধ এর বিস্তারিত

0
118

ডোনেশন করুন

Bkash বিকাশ
Nagad নগদ
Rocket রকেট

অনুদান পাঠাতে এই নম্বর(পার্সোনাল- বিকাশ, নগদ, রকেট) ব্যাবহার করুন এবং অনুদান সম্পূর্ণ করতে আপনার ফোন নম্বর, ডোনেশন এর পরিমাণ এবং ট্রানজেকশন আইডি ব্যবহার করুন।

ধন্যবাদ!

আমরা আপনার উদার দানের প্রশংসা করি। আপনার সমর্থন আমাদের উৎসাহিত করেছে!

ডোনেশন করুন

Bkash বিকাশ
Nagad নগদ
Rocket রকেট

অনুদান পাঠাতে এই নম্বর(পার্সোনাল- বিকাশ, নগদ, রকেট) ব্যাবহার করুন এবং অনুদান সম্পূর্ণ করতে আপনার ফোন নম্বর, ডোনেশন এর পরিমাণ এবং ট্রানজেকশন আইডি ব্যবহার করুন।

ধন্যবাদ!

আমরা আপনার উদার দানের প্রশংসা করি। আপনার সমর্থন আমাদের উৎসাহিত করেছে!

প্রাথমিক আলোচনাঃ ডায়াস্কোরিয়া হোমিও ঔষধ সম্বন্ধে সংক্ষেপে আমি আলোচনা করব। ঔষধটির প্রধান প্রধান লক্ষণ এবং ব্যবহার সম্পর্কে কিনোট তুলে ধরব। যেন সহজেই ঔষধটির চিত্র মনে গেঁথে থাকে। এছাড়া ঔষধের উৎপত্তি, ব্যবহার এবং আনুষাঙ্গিক আরো নানাবিধ তথ্যাবলী থাকবে এই লেখার ভেতর। আমার আলোচনাটি যদিও একটু দীর্ঘ হবে, তবে আমি এমন কৌশলে আলোচনা করার চেষ্টা করব যেন এই লেখাটি পাঠ করার সাথে সাথে ঔষধের একটি চিত্র মনে গেঁথে যায়।

ডায়াস্কোরিয়া হোমিও ঔষধ এর উৎপত্তিঃ

ডায়াস্কোরিয়া ভিল্লোসা(Dioscorea Villosa) হোমিও ঔষধের মাদার টিংচার ‘Wild yam’ নামক একটি লতা জাতীয় গাছের শিকড় থেকে তৈরি হয়। গাছটির আরো কিছু পরিচিত নাম রয়েছে যেমন Wild yam, Colic root, Rheumatism root, Devil’s bones, and Fourleaf yam ইত্যাদি। ‘Dioscorea villosa’ বা ‘Wild yam’ এই গাছটি- টেক্সাস, ফ্লোরিডা, মিনেসোটা, অন্টারিও এবং ম্যাসাচুসেটস অঞ্চলে বহুল পরিমাণে পাওয়া যায়।

ডায়াস্কোরিয়া এর বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিভাগঃ

Scientific classification:
Kingdom: Plantae
Clade: Tracheophytes
Clade: Angiosperms
Clade: Monocots
Order: Dioscoreales
Family: Dioscoreaceae
Genus: Dioscorea
Species: D. villosa
Binomial name: Dioscorea villosa

ডায়াস্কোরিয়া হোমিও ঔষধের ব্যবহারঃ

বেশ কিছু রোগ উপসর্গে ডায়াস্কোরিয়া হোমিও ঔষধটি ব্যবহার করে আমরা প্রতিনিয়ত সুফল পেয়ে থাকি। যেমন-

পেটে ব্যথা এবং গ্যাসের সমস্যাঃ সাধারণত নাভির স্থান থেকে তীব্র প্রকারের পেট ব্যথা শুরু হয় এবং তা সমস্ত পেটে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময়ে এই ব্যথা বুক এবং পিঠ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় রোগীর এসিডিটি বা বদহজমের সমস্যা থাকে। কলোসিন্থ ঔষধের পেট ব্যথা যেমন সামনে ঝুকলে বা পেটে চেপে ধরলে একটু কম হয়। ডায়াস্কোরিয়ার পেট ব্যথা ঠিক তার বিপরীত। অর্থাৎ পিছন দিকে হেললে এই ঔষধের রোগীর পেট ব্যথা একটু কম হয়। সামনের দিকে ঝুকলে এবং পেটে চাপ লাগলে ব্যথা আরো বেড়ে যায়।

ব্যথার ধরন সাধারণত কামড়ানি প্রকৃতির এবং খামচে ধরার মতন। যাদের প্রায়ই পেটে গ্যাসের সমস্যা থাকে, খাদ্যদ্রব্য হজম হয় না এবং পেট ফাঁপার সমস্যা থাকে তারা ডায়াস্কোরিয়া ওষুধটি সেবন করে অনেক উপকার পাবেন। পেটের হজম শক্তিকে বাড়িয়ে পেটের অস্বস্তিকে কমাতে সাহায্য করে এই ঔষধটি। মেরুদন্ড বা পিঠের ব্যথা যদি গ্যাসের ব্যথার সাথে সম্পর্কিত থাকে তবে ডায়াস্কোরিয়া ওষুধটিকে সেখানে ব্যবহার করা যায়। যাদের হজম শক্তি দুর্বল এবং চা খেলে পেটে বায়ু হয় তাদের ক্ষেত্রে ঔষধটি খুবই উপযোগী।

ডায়াস্কোরিয়া হোমিও ঔষধ
ডায়াস্কোরিয়া হোমিও ঔষধ

পিত্তথলির রোগঃ পিত্তথলির নানা রোগ, পিত্তথলির প্রদাহ, পিত্তথলির পাথুরি, ইত্যাদি পিত্তথলি এবং যকৃত সম্বন্ধীয় নানা রোগে ডায়াস্কোরিয়া ঔষধটি সেবনে অনেক উপকার হতে পারে।

ডান পায়ে সায়েটিকাঃ ডান পায়ের সায়েটিকা, স্থির হয়ে শুয়ে থাকলে উপশম, নড়াচাড়ায় বৃদ্ধি। বসে থাকলেও কখনো কখনো ব্যথা বাড়ে। কলোসিন্থ এর সায়েটিকা সাধারণত বাম পায়ে হয়ে থাকে।

আঙ্গুল হাড়াঃ আঙুলহাড়া(Felon) রোগের প্রথম অবস্থায় ঔষধটি ব্যবহার করতে পারলে দ্রুত এই রোগ আরোগ্য হয়। এই রোগে মাইরিস্টিকা ৩x উৎকৃষ্ট ঔষধ। রোগের প্রাথমিক অবস্থায় ডায়াস্কোরিয়া মাদার টিংচার বাহ্যিক প্রয়োগ ও সেবনে দ্রুত রোগ আরোগ্য হয়। এছাড়াও আইরিস ভার্স মাদার টিংচার প্রয়োগেও রোগ যন্ত্রণার দ্রুত উপশম হয়। নাইট্রিক এসিডের মাদার টিংচার জলের সাথে মিশিয়ে নেকড়া ভিজিয়ে আক্রান্ত আঙ্গুল বেঁধে রাখলে বা আক্রান্ত আঙ্গুল ওই ঔষধ মিশ্রিত জলে মাঝে মাঝে ডোবালে খুব দ্রুত জ্বালা-যন্ত্রণার উপশম হয়ে যায়।
এসিড ফ্লুওর(ঠান্ডায় জালা যন্ত্রণা উপশম হলে) সাইলিসিয়া (পূঁজ এবং বেদনা এই দুটিই অল্প পরিমাণে থাকলে) হিপার সালফ(স্পর্শকাতর বেদনা, অধিক পুজ এবং উত্তাপে উপশম)

সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করলে দেখা যাবে এই ঔষধটি বদহজমজনিত বিভিন্ন সমস্যা বিশেষ করে ডাইজেস্টিভ ডিসঅর্ডার জনিত রোগ এর উপরে খুব বেশী ক্রিয়াশীল। এবং এই ডাইজেস্টিভ ডিসঅর্ডার থেকে উৎপন্ন যে কোন প্রকার প্রদাহে এটি মন্ত্রশক্তিবৎ কাজ করে।

ডায়াস্কোরিয়ার সাথে সম্পর্কিত কিছু হোমিও ঔষধঃ

ডায়াস্কোরিয়া ঔষধের ন্যায় পেট ব্যথায় উপকারী আরো কিছু ঔষধের সংক্ষিপ্ত বিবরণ এখান তুলে ধরছি।

কলোসিন্থঃ ডায়াস্কোরিয়ার পেট ব্যথা যেমন বুকে এবং পিঠে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে কলোসিন্থের পেটব্যথা ওই রকম ছড়িয়ে পড়ে না বরং স্থানীয় ভাবে থাকে। ডায়াস্কোরিয়ার পেট ব্যথা যেমন এসিডিটির সাথে সম্পর্কযুক্ত কলোসিন্থের পেটব্যথা তেমন মানসিক নানা অবস্থার সাথে সম্পর্কিত।

নেট্রাম ফসঃ ডায়াস্কোরিয়া পিত্তথলি সম্বন্ধীয় রোগ এবং পেট ব্যথার ক্ষেত্রে যেমন ব্যবহৃত হয় তবে নেট্রাম ফস এ সাধারণত অম্ল বা টক ঢেকুরের সমস্যা থাকে। পেটে অম্ল এবং ক্ষারের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে নেট্রাম ফস।

ম্যাগ ফসঃ পেট ব্যথা গরম পানীয় সেবনে বা গরমের উত্তাপে যদি কম হয় সেখানে সুন্দর কাজ করে।

ক্যামোমিলাঃ শিশুদের দাঁত ওঠার সময় বা কখনো কখনো অতিরিক্ত রাগ থেকে পেট ব্যাথা হয়ে থাকে। এই ঔষধের রোগীর পেট ব্যথা অতিসংবেদনশীল হয়ে থাকে। এবং ব্যথার প্রচন্ডতায় রোগী ছটফট করতে থাকে। ক্রোধ বা মানসিক চাপ থেকে সৃষ্ট যেকোনো রোগে ক্যামোমিলা খুব সুন্দর ক্রিয়া করে।

এছাড়াও কার্বোভেজ, বেলেডোনা, পালসেটিলা, লাইকোপোডিয়াম ইত্যাদি ঔষধগুলোও লক্ষণ বিচারে ব্যবহার করলে ভয়ানক প্রকৃতির পেটব্যথা এবং বদহজমের সমস্যা আরোগ্য হতে পারে।

ডায়াস্কোরিয়া ঔষধটি পিত্তপাথরী(Gall stone) মূত্রগ্রন্থির শুল(Nephritic colic) ঋতুশূল(Menstrual colic) বাধক বেদনা(Dysmenorrhoea) পাকাশয় শূল(Gastraligia) এবং পেট ফাঁপার সহিত পেট বেদনা আরোগ্য করতে পারে। এছাড়া অত্যন্ত বেদনাযুক্ত অর্শ রোগ এবং স্বপ্নদোষ(নাক্স ভামিকা, লাইকোপোডিয়াম, সেলিনিয়াম, কোনিয়াম, জেলসিমিয়াম, এসিড ফস, ডিজিটেলিস) আরোগ্য করতে পারে এই ঔষধটি। ডায়াস্কোরিয়াতে একরাত্রে উপর্যুপরি দুই তিনবারেরও বেশি স্বপ্নদোষ হয়ে থাকে এবং পরদিন প্রচন্ড দুর্বলতা অনুভব করে। এবং রোগীর হাঁটু এত দুর্বল হয় যে হাঁটতে প্রচন্ড কষ্ট হয়।

ডায়াস্কোরিয়ার হ্রাস বৃদ্ধিঃ

শুয়ে থাকার সময়, বসলে এবং দুই ভাজ হয়ে সামনে ঝুকলে রোগের বৃদ্ধি হয়। উত্তাপ এবং চলাফেরায় রোগের প্রবলতা কম হয়। যদিও হেটে চলে বেড়াতে রোগীর কষ্ট হয় তবুও না হেঁটে রোগী পারে না।

অন্যান্য ঔষধের সাথে সম্বন্ধঃ

অন্য যে সকল হোমিওপ্যাথিক ঔষধের সাথে ডায়াস্কোরিয়া ঔষধের সামান্য ভালো সম্বন্ধ সেগুলো হলো কলোসিন্থ, রাস টক্স, ফসফরাস, পডোফাইলাম, সাইলিসিয়া।

ডায়াস্কোরিয়া ঔষধের শক্তিঃ

সাধারণত ৩, ৬, ৩০, ও ২০০ শক্তির ঔষধ প্রয়োগই যথেষ্ট। খুব বেশি উচ্চশক্তি ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। শক্তিকৃত ঔষধের পাশাপাশি প্রয়োজনে এর মাদার টিংচার নির্দিষ্ট পরিমাণ জলের সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করা যাবে।

উপসংহারঃ মনে রাখতে হবে প্রত্যেকটি হোমিওপ্যাথিক ঔষধেরই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও স্বতন্ত্রতা আছে। রোগীর সামগ্রিক রোগ লক্ষণের সঙ্গে না মিলিয়ে কোন ঔষধ প্রয়োগ করলে তার থেকে যথার্থ উপকার আশা করা যায় না। তাই যেকোনো সময় সঠিক চিকিৎসার জন্য একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ নাক্স ভমিকার ব্যাবহার, ডোজ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ডা. দীপংকর মন্ডল
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ
০৭.০১.২০২৫

এই লেখাটি আপনার উপকারে এসেছে কি? আরো নতুন লেখা তৈরির জন্য আর্থিকভাবে অবদান রাখতে পারেন। যেকোন পরিমাণ আর্থিক কন্ট্রিবিউশন  করতে নীচের ডোনেট বাটন ব্যাবহার করুন।

Previous articleউষ্ণ গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে কি হয়?
Next articleডা. জে এন কাঞ্জিলালের হোমিও কেস টেকিং ফরম
Dr. Dipankar Mondal
হোমিওপ্যাথিক নীতি অনুযায়ী রোগীর সামগ্রীক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দ্বারাই জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। জীবনযাপনের ভুল অভ্যাস থেকে সৃষ্ট রোগ, সংযম ব্যতীত শুধুমাত্র ঔষধ সেবনের দ্বারা প্রতিরোধ বা আরোগ্যের আশা করা বাতুলতা মাত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here