কথায় আছে দাঁত গেল তো ভাত গেল! সত্যিই তাই আমরা দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝিনা।
যেভাবে চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে সেই ভাবে যখন আমাদের দাঁতগুলোর একেবারে বেহাল দশা হয়ে যায় তখন আমাদের হুঁশ ফেরে।

দাঁতের গোড়ায় পাথর জমা (Stone Formation) একটি সাধারন সমস্যা। কমবেশি সকলেই আমরা এই সমস্যায় ভুগে থাকি। দাঁতের গোড়ায় খাদ্য কনা জমে থেকে সেগুলো পাথরের আকার নেয়। দীর্ঘদিন দাঁতের গোড়ায় পাথর জমে থাকলে তা দাঁত কে দুর্বল করে দেয়। দাঁতের সুস্থতার আয়ু কমিয়ে দেয়।
দাঁতের গোড়ায় পাথর দূর করার উপায়ঃ
পাথর প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধই উত্তম। টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার পাশাপাশি মাঝেমাঝে নিম, পিঠেগড়া ইত্যাদির ডালের দাঁতন ব্যবহার করে দাঁত ব্রাশ করা এই পাথর প্রতিরোধের পক্ষে উত্তম। দিনে অন্তত দুইবার দাঁত ব্রাশ করলে এই পাথর হওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমে যায়। বিশেষত রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে দাঁত ব্রাশ করে ঘুমানো উচিত।
দাঁতের গোড়ায় পাথর সতর্কতা ও সাবধানতাঃ
যতদূর সম্ভব দাঁত স্কেলিং না করানোই ভালো। আমি এখন পর্যন্ত আমার চেম্বারে যে সকল রোগীদের দেখেছি যারা কখনো না কখনো দাঁতের স্কেলিং করিয়েছে বা দাঁতের গোড়ার পাথর তুলেছে ডেন্টিসদের কাছ থেকে তাদের দাঁতে কোন না কোন সমস্যা লেগেই আছে। দাঁতের শিরশিরানি, দাঁতের নড়বড়ে ভাব, খাবার খেতে কষ্ট ইত্যাদি নানাবিধ অসুবিধায় তারা ভুগে থাকে। অর্থাৎ পাথর তুলে উপকারের পরিবর্তে তাদের অপকারই বেশি হয়েছে এই সকল রোগীরা নিজেরাই আমাকে তা বলেছে। তাই নিতান্তই যদি কারো দাঁত স্কেলিং করানোর প্রয়োজন হয় তবে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডেন্টিস্ট নির্বাচন করুন।

কোন আনাড়ি ডেন্টিষ্টের ভুলের কারণে দাঁতের কত বড় ক্ষতি হতে পারে তা নিচের ছবিটি ভালো করে খেয়াল করে দেখুন। আজ এই রোগী আমার কাছে চিকিৎসার জন্য এসেছিল। এই রোগীর দাঁতের গোড়াগুলো যেন করাত দিয়ে কেটে দেওয়ার মত কেটে গেছে- দাঁত স্কেলিং করার সময়, মেশিনের ভুল ব্যবহারের কারণে। দাঁতের অর্ধেকটা প্রায় কেটে যাওয়ার কারণে দাঁতগুলোর Blood vessels, Nerve ending এসব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইনার দাঁতে এখন সব সময় শিরশিরানী ভাব ও যন্ত্রণা থাকে। ইদানিং তা আরো অধিক পরিমাণে বেড়ে গেছে।
আজ এই পর্যন্ত।
সবাই দাঁতের যত্ন নিন। ব্রাশের পাশাপাশি মাঝেমাঝে দাঁতন ব্যবহার করুন দাঁত পরিষ্কার করতে।
আরো পড়ুনঃ মাইগ্রেন থেকে মুক্তির উপায় হোমিওপ্যাথি