সুস্থতার চাবিকাঠিঃ শরীরের প্রতিটি অঙ্গের বিশ্রাম কিভাবে দেবেন?

0
225

ডোনেশন করুন

Bkash বিকাশ
Nagad নগদ
Rocket রকেট

অনুদান পাঠাতে এই নম্বর(পার্সোনাল- বিকাশ, নগদ, রকেট) ব্যাবহার করুন এবং অনুদান সম্পূর্ণ করতে আপনার ফোন নম্বর, ডোনেশন এর পরিমাণ এবং ট্রানজেকশন আইডি ব্যবহার করুন।

ধন্যবাদ!

আমরা আপনার উদার দানের প্রশংসা করি। আপনার সমর্থন আমাদের উৎসাহিত করেছে!

ডোনেশন করুন

Bkash বিকাশ
Nagad নগদ
Rocket রকেট

অনুদান পাঠাতে এই নম্বর(পার্সোনাল- বিকাশ, নগদ, রকেট) ব্যাবহার করুন এবং অনুদান সম্পূর্ণ করতে আপনার ফোন নম্বর, ডোনেশন এর পরিমাণ এবং ট্রানজেকশন আইডি ব্যবহার করুন।

ধন্যবাদ!

আমরা আপনার উদার দানের প্রশংসা করি। আপনার সমর্থন আমাদের উৎসাহিত করেছে!

প্রাথমিক আলোচনাঃ আজকের আলোচনাতে আমি শরীরের প্রতিটি অঙ্গের বিশ্রামের গুরুত্ব এবং কিভাবে তাদের আমরা বিশ্রাম দিতে পারি এই বিষয়ে আলোচনা করব।

মানুষের শরীর একটি জটিল যন্ত্রের মত। নিয়মে যেমন তা দীর্ঘদিন চলে, তেমনি অনিয়মে আবার সহজেই বিগড়ায়। আমাদের শরীরের কিছু অঙ্গ আছে যা অবিরত কাজ করে চলেছে। আমাদের হজম প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে রক্ত সঞ্চালন, শ্বাস প্রশ্বাস, হৃদপিণ্ড, মনের স্তরের ক্রিয়া সবকিছুই অবিরাম চলছে।

আমরা যেমন অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে করতে ক্লান্ত হয়ে একটু বিশ্রাম খুঁজি। ঠিক তেমনি আমাদের শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গই এইরকম বিশ্রাম চায়। কথায় আছে বিশ্রাম কাজের অঙ্গ। শরীরের এই সকল অঙ্গ কে বিশ্রাম দিলে তারা আরো অধিক শক্তিশালী হয়ে শরীর রক্ষণের কাজ করতে থাকে।

প্রতিটি অঙ্গের বিশ্রাম ছবি
প্রতিটি অঙ্গের বিশ্রাম ছবি

আমরা অনেক সময় এই বিষয়ের প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে আমাদের শরীরের এই সকল গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো বিশ্রাম পায়না। তার ফলে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

শরীরের প্রতিটি অঙ্গের বিশ্রামের কৌশলঃ

আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর প্রত্যেকটিকে আলাদা আলাদা ভাবে কিভাবে বিশ্রাম দিতে পারি সেই বিষয়ে এখন আলোচনা করছি।

চোখের বিশ্রামঃ

চোখের কোন রোগ হলে আমাদের চোখের বিশ্রাম দিতে হয়। চোখের বিশ্রাম দিতে কিছু সময়ের জন্য চোখ বন্ধ করে রাখা যেতে পারে। কিছুটা ঘুমালেও চোখের বিশ্রাম হয়। অতিরিক্ত ঠান্ডা বাতাস, ধুলাবালি এইসব থেকে যেন চোখ রক্ষা পায় খেয়াল রাখতে হবে। কম্পিউটার, মোবাইল, ল্যাপটপ এই সকল ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করার সময়ে একনাগাড়ে ডিসপ্লের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রয়োজন হয়। এইসব ক্ষেত্রে ২০-২০-২০ ফর্মুলা ব্যবহার করা যেতে পারে। অর্থাৎ কুড়ি মিনিট ডিভাইসের দিকে তাকিয়ে থাকার পর 20 সেকেন্ডের মতো দূরের কোন বস্তুর দিকে তাকাতে হবে। বাইরের ধুলাবালি যুক্ত পরিবেশ থেকে চোখকে রক্ষা করতে চোখে চশমা ব্যাবহার করা যেতে পারে।

মস্তিষ্কের বিশ্রামঃ

পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমিয়ে আমরা আমাদের মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দিতে পারি। চিন্তা প্রবাহকে বন্ধ করে যোগ অনুশীলন বা মেডিটেশন এর মাধ্যমেও মস্তিষ্কের বিশ্রাম সম্ভব।

পাকস্থলীর বিশ্রামঃ

উপবাসই পাকস্থলীর উত্তম বিশ্রাম। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর উপবাস করলে আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম বিশ্রামের সুযোগ পায়। তাছাড়া আমাদের খাবার যদি কম মসলাযুক্ত ও অল্প তেল-মশলা যুক্ত হয় সে ক্ষেত্রেও পাকস্থলীকে তার কাজ করতে সহায়তা করা হয়। আদর্শ খাবার পরিমিত মাত্রায় খেলে পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা অটুট থাকে। খাবার ভালো করে চিবিয়ে খেলে পাকস্থলীর অর্ধেক কাজ সম্পন্ন করে দেওয়া হয়।

হৃদপিন্ডের বিশ্রামঃ

নিয়মিত শরীরচর্চা ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের শরীরের সর্ব প্রধান মূল্যবান যন্ত্র হৃৎপিণ্ডকে আমরা বিশ্রাম দিতে পারি। ধূমপান ও মদ্যপান দ্বারা হৃদপিণ্ডকে অত্যাচার করা হয়। পাকস্থলী এবং হৃদপিন্ডের দূরত্ব খুব বেশি নয়। তাই পাকস্থলীতে বায়ু জমলে তা হৃদপিন্ড কে চাপ দেয়। পাকস্থলীকে বিশ্রাম দিতে পারলে হার্টকেও বিশ্রাম দেয়া হয়। তাই হৃদপিণ্ডকে বিশ্রাম দিতে হলে লঘুপাক অথচ বলকারক এইরকম খাবার খেতে হবে। এর সাথে মনে রাখতে হবে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য হার্টকে বলবান করে।

কিডনির বিশ্রামঃ

কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ জল পান করতে হবে। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে হবে। বিভিন্ন রোগের জন্য নানাবিধ প্রকারের রাসায়নিক ঔষধ সেবন করলে তা আমাদের কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করে। কেননা এই সকল ঔষধের বিষাক্ত উপাদান গুলিকে কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে থাকে। অতিরিক্ত লবণ সেবন করলে তা কিডনির ক্ষতি করে থাকে।

ফুসফুসের বিশ্রামঃ

বিশুদ্ধ বাতাস সেবন ফুসফুসের জন্য উপকারী। ভোরের বায়ু ফুসফুসের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। এর সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন লম্বা শ্বাসের ব্যায়াম (Breathing exercise) এর সহায়তায় ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়। ধূমপান ভীষণভাবে ফুসফুসের ক্ষতি করে থাকে তাই তা সর্বতোভাবে পরিত্যাজ্য। এই নিয়মগুলো পালন করলে ফুসফুস এবং শ্বাসনালী সুস্থ থাকবে।

স্নায়ুতন্ত্রের বিশ্রামঃ

স্নায়ুতন্ত্রের বিশ্রামের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমানো অপরিহার্য। স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের সাথে সাথে হালকা ধরনের শরীরচর্চা দ্বারা স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ রাখা যায়।

পিত্তথলির বিশ্রামঃ

তেল বা চর্বিযুক্ত খাবার পিত্তথলির জন্য ক্ষতিকারক। অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার সেবনে পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে। প্রক্রিয়াজাত খাবারও পিত্তথলির ক্ষতি করে থাকে। তাই পিত্তথলির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কম তেল যুক্ত খাবার, শস্যাদি, ফলমূল ও ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে। মদ্যপান থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকতে হবে। কেননা মদ সরাসরি লিভার এবং পিত্তথলির উপর আক্রমণ করে থাকে। পরিমিত মাত্রায় জল পান করুন।

অগ্নাশয় এর বিশ্রামঃ

চিনি যুক্ত সকল খাবার পরিমিত মাত্রায় খাবার খেতে হবে। নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে। ধূমপান বা যেকোন নেশা থাকলে তা পরিত্যাগ করতে হবে।

থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের বিশ্রামঃ

থাইরয়েড গ্ল্যান্ড এর বিশ্রামের জন্য পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। পরিমিত মাত্রায় ঘুমাতে হবে। মানসিক চাপ কমাতে হবে।

মূত্রাশয়ের বিশ্রামঃ

পরিমিত মাত্রায় জল পান করুন এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর-প্রস্রাব করে মূত্রথলিকে শূন্য করুন। কখনোই প্রস্রাবের বেগ ধারণ করবেন না। অর্থাৎ অতিরিক্ত প্রস্রাব মূত্র থলিতে জমা রেখে দীর্ঘক্ষণ অতিবাহিত করবেন না। ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল যুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।

অন্ত্রের বিশ্রামঃ

ফাইবার সমৃদ্ধ বিভিন্ন খাবার যেমন গোটা শস্য, সবজি, ফল ইত্যাদি আমাদের অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। পর্যাপ্ত জল পান খাবার কে হজম করতে ও মল পরিষ্কার করতে সহায়তা করে থাকে। এর সাথে নিয়মিত শরীরচর্চা অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে।

হরমোন গ্রন্থির বিশ্রামঃ

আমাদের হরমোন গ্রন্থির (Endocrine gland) বিশ্রামের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত দরকারি। এর সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাবার আহার করতে হবে। এবং যতটা সম্ভব মানসিক দুশ্চিন্তাকে দূরে রাখতে হবে। অত্যাধিক মানসিক দুশ্চিন্তা থাকলে তা হরমোনের ভারসাম্যকে নষ্ট করে।

নাক ও কানের বিশ্রামঃ

নাক এবং কানের বিশ্রামের জন্য দূষিত বাতাস সেবন ও উচ্চশব্দ যুক্ত পরিবেশকে এড়িয়ে চলুন।

হাড়ের বিশ্রামঃ

হাড়ের সুস্থতার জন্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি গ্রহণ করুন। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়ামকে শোষণ (Absorbed) করতে সহায়তা করে। নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে। সম্ভব হলে ভারত্তোলনের ব্যায়াম করা যেতে পারে। পরিমিত মাত্রায় ঘুমাতে হবে।

উপসংহারঃ শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য প্রতিটি অঙ্গের বিশ্রাম অপরিহার্য। একটানা পরিশ্রম করলে মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তদ্রুপ আমাদের প্রত্যেকটি শারীরিক অঙ্গ একটানা কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তখন প্রতিটি অঙ্গের বিশ্রাম নিশ্চিত করে তাদের সহায়তা করলে তারা পুনরায় শক্তি লাভ করে এবং যথা নিয়মে দীর্ঘদিন চলতে থাকে।

আরো পড়ুনঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়ঃ ৪ টি অব্যর্থ টিপস

ডা. দীপংকর মন্ডল
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ
২০.০২.২০২৫

এই লেখাটি আপনার উপকারে এসেছে কি? আরো নতুন লেখা তৈরির জন্য আর্থিকভাবে অবদান রাখতে পারেন। যেকোন পরিমাণ আর্থিক কন্ট্রিবিউশন  করতে নীচের ডোনেট বাটন ব্যাবহার করুন।

Previous articleরোগীর আকাঙ্ক্ষা পূরণ করলে কোন ক্ষতি হয় না
Next articleঅস্থিতন্ত্রের গঠন, কার্যকারিতা এবং হাড়ের প্রধান সমস্যা
Dr. Dipankar Mondal
হোমিওপ্যাথিক নীতি অনুযায়ী রোগীর সামগ্রীক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দ্বারাই জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। জীবনযাপনের ভুল অভ্যাস থেকে সৃষ্ট রোগ, সংযম ব্যতীত শুধুমাত্র ঔষধ সেবনের দ্বারা প্রতিরোধ বা আরোগ্যের আশা করা বাতুলতা মাত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here