ফোড়ার শ্রেণীবিভাগ লক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা

0
173

সাধারণত প্রদাহ থেকে উৎপন্ন দেহের শক্ত বা কঠিন আকৃতির টিস্যুতে বর্জ্যপদার্থ পূঁজ আকারে একত্রে জমা হলে তাকে এবসেস বা ফোঁড়া বলে।

এবসেস বা ফোড়ার শ্রেণীবিভাগঃ

ফোড়া বা এবসেস কে সাধারনত চার প্রকারে ভাগ করা যায়-
১) পায়োজেনিক এবসেসঃ এই জাতীয় ফোড়া পায়োজেনিক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা উৎপন্ন হয়ে থাকে।
২) পাইয়েমিক এবসেসঃ সাধারণত এই জাতীয় ফোঁড়ার ক্ষেত্রে পূঁজ রক্তের সাথে মিশ্রিত হয়ে থাকে। এই জাতীয় ফোঁড়ার ক্ষেত্রে ফোঁড়ার শুষ্ক অংশের সংস্পর্শে পুনরায় নতুন করে ফোঁড়া সৃষ্টি হয়ে থাকে।
ফোড়া ছবি
কার্বঙ্কল ছবি
৩) কোল্ড এবসেসঃ এই জাতীয় ফোঁড়া টিউবারকুলার ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দ্বারা হয়ে থাকে। কোল্ড এবসেস সাধারণত বেদনাহীন হয়ে থাকে।
৪) রেডিকুলাস এবসেসঃ এই জাতীয় ফোঁড়ার ক্ষেত্রে ফোঁড়ার শুষ্ক অংশের সংস্পর্শে পুনরায় নতুন করে ফোড়া সৃষ্টি হয়ে থাকে।

এবসেস বা ফোঁড়ার লক্ষণাবলীঃ

সাধারণত যে স্থানে ফোঁড়া হয় সেখানে প্রদাহের সাথে ফোলাভাব মত গুটিকা বা শক্ত চাকা তৈরি হয়। সেই স্থান লাল বর্ণ ধারণ করে। অনেক ক্ষেত্রে উত্তাপ দেখা দেয়। প্রথম অবস্থায় পূঁজ থাকেনা কিন্তু পরবর্তীতে পেঁকে যায় ও পূঁজ হয়।
২) আক্রান্ত স্থানে প্রচন্ড পরিমাণ বেদনা ও টাইটানিক ভাব থাকে। অনেক ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর বেদনা থাকে।
৩) ফোঁড়ার প্রকৃতি মারাত্মক প্রকারের হলে অনেক সময় শরীরে জ্বর আসে। কিছু ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। এছাড়াও অস্থিরতাসহ অন্যান্য শারীরিক অসুবিধা দেখা দিতে পারে।
৪) ফোঁড়ায় পূঁজ জমা হলে ফোঁড়ার মুখে সাদা পূঁজ দেখা যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে পূজের সাথে রক্ত বের হয়। আর কিছু ক্ষেত্রে ফোঁড়া পাকেনা বা ফেটে পূঁজও বের হয়না।

এবসেস বা ফোঁড়ার ব্যবস্থাপনাঃ

ডাঃ ডগলাস এর মতে-
ফোঁড়ার প্রাথমিক অবস্থায় যখন চাকা চাকা ভাব সহ প্রদাহ থাকে তখন তিনভাগ কার্বলিক অ্যাসিড এর সাথে এক ভাগ পানি মিশ্রিত করিয়া ফোঁড়ার স্থানে লাগালে ফোড়া অঙ্কুরেই বিনাশ প্রাপ্ত হয়। দিনে দুই-তিনবার এই মিশ্রণ প্রলেপ আকারের ফোঁড়া স্থানে লাগাতে হবে। আর ফোড়া পেঁকে গেলে তাতে তোকমা ভিজিয়ে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া দ্রুত ফেটে যায়।
ফোড়া হলে টক জাতীয় খাদ্য একেবারে বর্জন করতে হবে। রোগীর জ্বর থাকলে পথ্য হিসাবে রোগীকে পুষ্টিযুক্ত তরল খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। আর যদি শরীরে জ্বর না থাকে তবে গরম ভাতের সাথে হালকা মাছের ঝোল, সবজির তরকারি ইত্যাদি খেতে দিতে হবে। রোগীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে। পরিস্থিতি ও গুরুত্ব অনুসারে জীবাণুনাশক ঔষধ ব্যবহার করতে হবে।
চিকিৎসাঃ রোগের লক্ষণসাদৃশ্য অনুসারে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা করতে হবে।
Previous articleহোমিওপ্যাথিক ঔষধের পুনঃপ্রয়োগের যথার্থ সময়
Next articleঅস্থিভঙ্গের লক্ষণ জটিলতা এবং ব্যবস্থাপনা
Dr. Dipankar Mondal
হোমিওপ্যাথিক নীতি অনুযায়ী রোগীর সামগ্রীক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দ্বারাই জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। জীবনযাপনের ভুল অভ্যাস থেকে সৃষ্ট রোগ, সংযম ব্যতীত শুধুমাত্র ঔষধ সেবনের দ্বারা প্রতিরোধ বা আরোগ্যের আশা করা বাতুলতা মাত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here