বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের পুষ্টির চাহিদা এবং যত্ন

0
139

ডোনেশন করুন

Bkash বিকাশ
Nagad নগদ
Rocket রকেট

অনুদান পাঠাতে এই নম্বর(পার্সোনাল- বিকাশ, নগদ, রকেট) ব্যাবহার করুন এবং অনুদান সম্পূর্ণ করতে আপনার ফোন নম্বর, ডোনেশন এর পরিমাণ এবং ট্রানজেকশন আইডি ব্যবহার করুন।

ধন্যবাদ!

আমরা আপনার উদার দানের প্রশংসা করি। আপনার সমর্থন আমাদের উৎসাহিত করেছে!

ডোনেশন করুন

Bkash বিকাশ
Nagad নগদ
Rocket রকেট

অনুদান পাঠাতে এই নম্বর(পার্সোনাল- বিকাশ, নগদ, রকেট) ব্যাবহার করুন এবং অনুদান সম্পূর্ণ করতে আপনার ফোন নম্বর, ডোনেশন এর পরিমাণ এবং ট্রানজেকশন আইডি ব্যবহার করুন।

ধন্যবাদ!

আমরা আপনার উদার দানের প্রশংসা করি। আপনার সমর্থন আমাদের উৎসাহিত করেছে!

ভূমিকাঃ বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের পুষ্টির চাহিদা এবং যত্ন নিয়ে আজকের লেখাটি পড়লে মায়েদের গর্ভাবস্থা থেকে প্রসব পরবর্তী যত্ন সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পাওয়া যাবে।

মাতৃত্ব একজন মায়ের জন্য যেমন অপার সৌন্দর্যের বিষয় তেমনি তা চ্যালেঞ্জিং ও বটে। প্রসবের পর একজন মায়ের শরীর এই সময় নানা পরিবর্তনের ভিতর দিয়ে যায়। গর্ভাবস্থা থেকে শুরু করে সন্তান প্রসব এবং প্রসাবের পর সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর সময় মায়ের শরীরে পুষ্টির চাহিদা বেড়ে যায়। কেননা এই সময়ে তাকে অতিরিক্ত আরেকটি শরীর কে পুষ্টি প্রদান করতে হয়। তাই এই সময় মায়ের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টির জোগান না হলে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও এই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম প্রয়োজন মায়ের জন্য।

বুকের দুধ খাওয়ানো মায়ের খাবার তালিকাঃ

মায়ের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি সরবরাহ করার জন্য নিচের খাবার খেতে দিতে হবে।

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ প্রাণিজ প্রোটিনের অন্যতম উৎস হল মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, সীফুড(চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুক) ইত্যাদি। আর উদ্ভিদ প্রোটিনের ভেতর অন্যতম হলো সকল প্রকার ডাল, বাদাম ও বীজ। রোগীকে প্রোটিন সমৃদ্ধ এই সকল খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে দিতে হবে।

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারঃ ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের অন্যতম উৎস হলো দুধ, দই, পনির ইত্যাদি। এগুলো হাড়ের স্বাস্থ্য যেমন ভালো রাখে তেমনি মায়ের বুকের দুধ বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও শাকসবজি এর ভেতর সজিনা পাতা, পালং শাক, ব্রকলি এগুলি ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। মাকে পরিমিত মাত্রায় ক্যালসিয়াম খাবার সরবরাহ করতে হবে।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবারঃ আয়রনের প্রাণিজ উৎস হলো লাল মাংস, মুরগির কলিজা, ছোট মাছের হাড়, ডিমের কুসুম, শেলফিশ(ঝিনুক, কাকড়া, চিংড়ি,) ইত্যাদি। শাক সবজির ভেতরে কচু শাক, ডুমুর, কাঁচকলা, কলার মোচা, কুলেখাড়া, পালং শাক, মেথি শাক এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যাবে। এছাড়াও কুমড়ার বীজ, তিলের বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, মসুর ডাল, ছোলা, কিসমিস, খেজুর, বাদাম এগুলোতে কিছু পরিমাণ আয়রন পাওয়া যাবে।

বুকের দুধ খাওয়ানো
বুকের দুধ খাওয়ানো

ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারঃ বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো মাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সম্মিলিত খাবার খেতে দিতে হবে। বিভিন্ন ফল ও সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া ভিটামিন সি শরীরে আয়রন শোষণে সহায়তা করে। ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও ক্লান্তি দূর করে।

সূর্যের আলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে। ভিটামিন ডি খেলে হাড়ের গঠন মজবুত হবে। শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি। সকালের হালকা রোদ গায়ে লাগানো স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। এছাড়াও ভিটামিন বি ১২, ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া মায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শর্করা জাতীয় খাবারঃ লাল চালের ভাত, লাল আটার রুটি, ওটস ইত্যাদি মাকে খেতে দিতে হবে। এগুলো ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার যা শরীরে শক্তি যোগায়।

স্বাস্থ্যকর চর্বিঃ অস্বাস্থ্যকর চর্বি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হলেও কিছু প্রাকৃতিক স্বাস্থ্যকর চর্বি আছে যেগুলো শরীরকে শক্তি প্রদান করে। যেমন অ্যাভোকাডো, বাদাম, বীজ এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট পাওয়া যাবে।

পর্যাপ্ত জল পানঃ বুকের দুধ খাওয়ানো মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কেননা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় দুধের সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়।

মায়ের খাবারের পরিকল্পনাঃ

সকালের নাস্তাঃ রুটি, ডিম, দুধ, ফল ও সবজি ইত্যাদি সকালের নাস্তাতে এই খাবারগুলো অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে।

দুপুরের খাবারঃ দিনের ভেতর সবথেকে ভারি খাবারটা দুপুরে খাওয়াই ভালো। কেননা এই সময় হজমশক্তি সর্বোত্তম ক্রিয়া করে থাকে। ফলে যেকোনো ভারী খাবারও সহজে হজম হয়ে যায়। ভাত, মাছ, মাংস, ডাল, ডিম, সবজি ইত্যাদি এই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে আহার করতে হবে। তবে অবশ্যই পরিমিত ও সংযত থাকতে হবে আহারের ক্ষেত্রে।

রাতের খাবারঃ রাতের খাবারও কিছুটা হালকা হওয়া চাই। ভাত ডাল দুধ সবজি ইত্যাদি রাতের খাবার হিসেবে পরিমিত মাত্রায় আহার করতে হবে।

স্নাক্সঃ দুইবারের খাবারের মাঝে যে হালকা খাবার আমরা খেয়ে থাকি তাকে বলে স্নাক্স। এটি সাধারণত ফল, সবজি এই জাতীয় হলেই ভালো হয়। অনেক সময় ফল বা সবজির সঙ্গে দই মিশিয়েও এই স্নাক্স তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে।

মায়ের জীবনযাত্রার পরিবর্তনঃ

প্রসব পরবর্তী সময়ে বা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় মাকে সর্বোচ্চ সতর্কভাবে জীবন যাপন করতে হবে।

পর্যাপ্ত বিশ্রামঃ রাত্রে বাচ্চা যখন ঘুমিয়ে যায় তখন মাকেও ঘুমিয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। এমনকি পরদিন দিনের বেলায়ও সুযোগ মত কিছুটা সময় ঘুমিয়ে বিশ্রাম নেওয়া যেতে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষাঃ দুশ্চিন্তা মুক্ত জীবন যাপনের জন্য প্রতিদিন নিয়ম করে কিছুটা সময়ের জন্য মেডিটেশন করা যেতে পারে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও এই সময়ে মায়ের প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে হবে। মায়ের মানসিক অবস্থা শক্তিশালী রাখতে তাকে যত্ন করতে হবে ও বিভিন্ন সমস্যায় তাকে মানসিক সাপোর্ট দিতে হবে। এই সময়ে মায়ের কোন ভুল ত্রুটি হলেও তা সহনশীল ভাবে দেখতে হবে।

সহায়তাঃ এই সময় মায়ের শরীর ক্লান্ত এবং দুর্বল থাকে কেননা তাকে বাচ্চার খাবার সরবরাহ করতে হয় এবং রাত জাগতে হয়। তাই এই সময়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উচিত ঘরের কাজে এবং শিশুর যত্নে মাকে সহায়তা করা।

উপসংহারঃ শিশুর যত্ন এবং স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য মায়ের সুস্বাস্থ্য অপরিহার্য। এই বিষয়ে অন্যান্যদের পাশাপাশি মাকে নিজেকেও সচেতন থাকতে হবে। সর্বোচ্চ সচেতন থেকে নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিতে হবে। আদর্শ খাবার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং মানসিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সচেতন থাকতে হবে। যেকোনো বিরূপ পরিস্থিতিতে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ অস্থিক্ষয় এর ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি

ডা. দীপংকর মন্ডল
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ
২৫.০২.২০২৫

এই লেখাটি আপনার উপকারে এসেছে কি? আরো নতুন লেখা তৈরির জন্য আর্থিকভাবে অবদান রাখতে পারেন। যেকোন পরিমাণ আর্থিক কন্ট্রিবিউশন  করতে নীচের ডোনেট বাটন ব্যাবহার করুন।

Previous articleঅস্থিতন্ত্রের গঠন, কার্যকারিতা এবং হাড়ের প্রধান সমস্যা
Next articleবিভিন্ন প্রকার আঘাতের হোমিও চিকিৎসা
Dr. Dipankar Mondal
হোমিওপ্যাথিক নীতি অনুযায়ী রোগীর সামগ্রীক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দ্বারাই জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। জীবনযাপনের ভুল অভ্যাস থেকে সৃষ্ট রোগ, সংযম ব্যতীত শুধুমাত্র ঔষধ সেবনের দ্বারা প্রতিরোধ বা আরোগ্যের আশা করা বাতুলতা মাত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here