মায়াজমের কারণ ও প্রতিরোধঃ
মায়াজমের কারণ ও তার প্রতিরোধ বিষয়ে জানার পূর্বে চলুন মায়াজম কি? সেই বিষয়ে জেনে আসি। মানব শরীরে বাইরে থেকে ভেতরের দিকে প্রবাহমান একটি দূষিত অবস্থা যা মানুষের শরীরের অভ্যন্তরস্থ বিভিন্ন যন্ত্র কে রোগাক্রান্ত করার প্রবণতা সৃষ্টি করে তাই দোষ বা মায়াজম। এই মায়াজম তিন প্রকারে শরীরে এসে থাকে।
১) অর্জিত
২) প্রাপ্ত এবং
৩) লব্ধ
অর্জিত দোষঃ মানুষের মনে বিদ্যমান দুষ্ট প্রবৃত্তিই তাকে দিয়ে দুষ্ট কার্যের সঙ্গ দেওয়ায়। এরুপ পরিস্থিতিতে যখন সিফিলিস বা গনোরিয়া রোগের আক্রমণ ঘটে তখন শরীর অভ্যন্তরস্থ সোরার প্রভাবে নতুবা বিশদৃশ চিকিৎসায় রোগলক্ষণ চাপা পড়ে রোগগুলো রোগের আকারে না থেকে দোষের আকার প্রাপ্ত হয়। নিজ জীবনে নিজ প্রচেষ্টায় অর্জিত দূষিত রোগলক্ষণ বিশদৃশ চিকিৎসা দ্বারা চাপা দিয়ে যে দোষ শরীরে সৃষ্টি করা হয় তাকে অর্জিত দোষ বলে ।
প্রাপ্ত দোষঃ রতিজ রোগ দুইটি যদি ব্যক্তি তার নিজ জীবনে অর্জন না করে থাকে, কিন্তু পূর্বপুরুষদের দ্বারা অর্জিত হয়ে থাকে এবং বংশপরম্পরায় প্রবাহিত হয় তাহলে তাকে প্রাপ্ত দোষ বলে। এক্ষেত্রে রোগের অর্জন ও রোগটির দোষের আকারে পরিবর্তন পূর্বপুরুষে ঘটে থাকে।
লব্ধ দোষঃ বংশানুক্রমিক প্রাপ্ত দোষ ব্যতীত আরো কিছু উপায়ে ব্যক্তির শরীরে এই দোষ আসতে পারে যাকে লব্ধ দোষ বলে। যেমন শরীরে টিকার কুফলে প্রাপ্ত দোষ। পারদ জাতীয় ভেষজের দ্বারা চিকিৎসা হওয়ার ফলে প্রাপ্ত দোষ। ইত্যাদি।
উপরিউল্লিখিত বিষয় সমূহ দ্বারা আমরা দোষ সমূহ প্রাপ্ত হয়ে থাকি।
দোষের প্রতিরোধঃ দোষসমূহের প্রতিরোধকল্পে একমাত্র কার্যকরী উপায় হল আদর্শ ও সংযত রুচিবোধের অধীনে জীবনযাপন করা। অন্যথায় কাম, ক্রোধ ,লোভ ইত্যাদি দ্বারা পরিচালিত হয়ে জীবন যাপনে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় ।
আর দোষসমূহ বা মায়াজমের প্রতিকারার্থে শক্তিকৃত হোমিওপ্যাথিক মায়াজমেটিক ঔষধ সেবন করা যায়। রোগভোগ পাপের প্রায়শ্চিত্ত রূপে এসে থাকে। তেমনি আদর্শ জীবন যাপনের ফলস্বরুপ সুখী, নিরাপদ ও অনেকাংশে নিরোগ জীবন পুরস্কার স্বরূপ লাভ করা যায়।
আরো পড়ুনঃ পাতলা পায়খানার রোগীর খাদ্যের পরামর্শ ও ব্যবস্থাপনা