শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০৮ অপরাহ্ন

৩০ দিন শরীরচর্চা চ্যালেঞ্জ ৫ম দিনের অভিজ্ঞতা

ডা. দীপংকর মন্ডল
  • আপডেট সময়ঃ শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২১৩ বার দেখা হয়েছে
শরীর চর্চা চ্যালেঞ্জ ৫
শরীর চর্চা চ্যালেঞ্জ ৫

৩০ দিন শরীরচর্চা চ্যালেঞ্জ ৫ম দিন অভিজ্ঞতা শেয়ার করব। পূর্বের প্র্যাকটিসের দিনগুলো মোটামুটি সফলতার সাথে পার হয়েছে। এখানে সকালবেলা বলতে জাস্ট নিয়মিত অনুশীলন টাকেই আমি প্রাধান্য দিচ্ছি। কেননা যোগ অনুশীলনের প্রথম দিকে সাধারণত কোয়ালিটি কম থাকে। শরীর চর্চার অনেক কিছু শিক্ষার বাকি থাকে। এই কারণে এই অবস্থায় শুধু নিয়মিত অনুশীলনের প্রাকটিসটা ধরে রাখাই গুরুত্বপূর্ণ। যদি নিয়মিত চর্চাটা ধরে রাখা যায় তবে কখনো না কখনো অবশ্যই প্র্যাকটিসের মান উন্নত হবে।

শরীরচর্চা চ্যালেঞ্জ ৫ম দিনের শুরুঃ

যথারীতি ওয়ার্ম আপ দিয়েই শুরু করে থাকি প্রতিদিন। কিন্তু আজকে ওয়ার্ম আপ এর কথা আমার মনে ছিল না। আমি সরাসরি প্রাক্টিস এ চলে গিয়েছিলাম। আজকে বৃহস্পতিবার। চারটের রুটিন অনুযায়ী আজকে যে শরীর চর্চার উল্লেখ আছে তা হল- সাঁতার বা যোগব্যায়াম। যদিও আমাদের বাড়িতে সাঁতার কাটার মত পুকুর আছে তবু আমি যোগ ব্যায়াম করলাম আজ। বিভিন্ন প্রকার যৌনশীলনের মধ্য থেকে প্রাথমিক স্তরে অনুশীলনগুলোর ভেতর উল্লেখযোগ্য হল বৃক্ষাসন এবং ভুজঙ্গাসন। আরো অনেকগুলোই আছে। তবে আমি এই দুটি আজকে অনুশীলন করলাম।

বৃক্ষাসন কিভাবে করতে হয়?

বৃক্ষাসন বা ট্রি পোজ হল একটি যোগাসন যা শরীর ও মনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি করতে হলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

১. প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়ান এবং আপনার পা দুটোকে একসাথে রাখুন। আপনার হাত দুটো শরীরের পাশে রাখুন।

২. এবার আপনার ডান পা মাটি থেকে তুলুন এবং আপনার বাম পায়ের ভেতরের উরুর ওপর রাখুন। আপনার ডান পায়ের পাতা আপনার বাম উরুর ভেতরের দিকে থাকবে।

৩. আপনার বাম পায়ের ওপর ভর দিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখুন। আপনার মেরুদণ্ড সোজা রাখুন।

৪. এবার আপনার হাত দুটো মাথার ওপরে তুলুন এবং নমস্কারের ভঙ্গিতে জোড়া করুন।

৫. আপনার দৃষ্টি সামনের দিকে স্থির রাখুন এবং ধীরে ধীরে শ্বাস নিন ও ছাড়ুন।

৬. ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট পর্যন্ত এই ভঙ্গিতে থাকুন।

৭. ধীরে ধীরে আপনার হাত দুটো নামান এবং আপনার ডান পা মাটি থেকে নামান।

৮. এবার আপনার বাম পা তুলে আপনার ডান পায়ের ভেতরের উরুর ওপর রেখে একই ভাবে করুন।

৯. এই আসনটি ৩-৫ বার পুনরাবৃত্তি করুন।

সতর্কতা:

যাদের কোমর, ঘাড় বা হাঁটুতে কোনো সমস্যা আছে, তাদের এই আসনটি করা উচিত নয়।
গর্ভবতী মহিলাদেরও এই আসনটি করা উচিত নয়।
প্রথম দিকে ভারসাম্য বজায় রাখতে অসুবিধা হলে, দেয়ালের সাহায্যে এই আসনটি করা যেতে পারে।

ভুজঙ্গাসন কিভাবে করতে হয়?

ভুজঙ্গাসন বা কোবরা পোজ একটি পশ্চাৎমুখী যোগাসন। এটি মেরুদণ্ড, বুক এবং কাঁধের জন্য উপকারী। ভুজঙ্গাসন করার পদ্ধতি নিচে বর্ণনা করা হলো:

১. প্রথমে পেটের উপর ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। পা দুটো সামান্য ফাঁকা রাখুন। হাতের তালু কাঁধের পাশে মাটিতে রাখুন। কপাল মাটিতে ঠেকান।

২. এবার ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে মাথা, বুক ও পেট মাটি থেকে তুলতে শুরু করুন। হাতের তালুর উপর ভর দিন এবং শরীরকে যতটা সম্ভব উপরের দিকে তুলুন।

৩. মেরুদণ্ড বাঁকিয়ে মাথা পিছনের দিকে হেলিয়ে দিন। দৃষ্টি উপরের দিকে বা সামনের দিকে রাখুন।

৪. এই ভঙ্গিতে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকুন, অথবা আপনার সুবিধা অনুযায়ী সময় বাড়াতে পারেন।

৫. ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে শরীর নামিয়ে আনুন এবং কপাল মাটিতে ঠেকান।

৬. এই আসনটি ৩-৫ বার পুনরাবৃত্তি করুন।

ভুজঙ্গাসনের উপকারিতা:

মেরুদণ্ড নমনীয় করে এবং পিঠের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
বুক ও ফুসফুস প্রসারিত করে, শ্বাস প্রশ্বাস উন্নত করে।
পেটের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে উদ্দীপিত করে, হজম ক্ষমতা বাড়ায়।
মানসিক চাপ ও ক্লান্তি কমায়।
কোমর ও নিতম্বের পেশী শক্তিশালী করে।

সতর্কতা:

যাদের পিঠে বা কোমরে গুরুতর সমস্যা আছে তাদের এই আসন করা উচিত নয়।
পেটে অস্ত্রোপচার হয়ে থাকলে বা গর্ভবতী মহিলাদের এই আসন করা উচিত নয়।
উচ্চ রক্তচাপ বা হার্টের সমস্যা থাকলে এই আসন করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রথম দিকে এই আসন করার সময় অসুবিধা হতে পারে, তাই ধীরে ধীরে অনুশীলন করুন।

বৃক্ষাসন কিভাবে করতে হয়? এবং ভুজঙ্গাসন কিভাবে করতে হয়? এই দুটি টপিক জিমিনি ব্যাবহার করে লিখিয়ে এখানে পোষ্ট করেছি।

অনুশীলনের প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে আমার মনে পড়লো যে ওয়ার্ম আপ তো করা হয়নি! ওয়ারমার সাধারণত করা হয় শরীরকে ব্যায়ামের উপযোগী করার জন্য। স্বাভাবিক অবস্থায় শরীরের রক্ত সরবরাহ প্রক্রিয়া একটা স্বাভাবিক স্তরে থাকে। এছাড়াও শরীরটা স্বাভাবিক নিয়ম চলতে থাকে। হঠাৎ করে কোন ভারী শরীর চর্চা করতে শুরু করলে সে ক্ষেত্রে নানা অসুবিধা হতে পারে। এইজন্যই প্রথমেই ওয়ার্ম আপ করে শরীরকে উপযুক্ত করে নেয়া হয়। তাই শরীরচর্চা বা যোগাসন প্রাকটিসের শেষের পর্যায়ে এসে ওয়ার্ম মাপ করার কোন প্রয়োজন থাকে না।

তবুও আমার জন্য অভ্যাসটা গড়ে ওঠে এই কারণেই আমি এই শেষের মুহূর্তেও ওয়ার্ম আপ করা শুরু করলাম। আর তাছাড়া ওয়ার্ম আপ এর যে প্রক্রিয়াগুলো সেগুলোও তো এক প্রকার শরীর চর্চা। এটাতেও শরীরের যথেষ্ট উপকার হয়।

পঞ্চম দিনের অভিজ্ঞতাঃ পারিবারিক একটু ব্যস্ততার কারণে আজকে সময় মত শরীফ চাচা অনুশীলন শুরু করতে পারিনি। সামান্য একটু দেরী হয়ে গিয়েছিল। তবুও সেই সময়টুকু সমন্বয় করে আরম্ভ করেছিলাম এবং সফলভাবে আজকের অনুশীলন শেষ করলাম। সাতটা বেজে ২৫ মিনিটে শরীর চর্চার শুরু করেছিলাম এবং সাতটা বেজে ৪০ মিনিটে প্র্যাকটিস শেষ করেছিলাম। অর্থাৎ সর্বমোট ২০ মিনিট আজকে প্রাকটিস করলাম।

নিশ্চয়ই আগামীকাল আবার কথা হবে। সকলের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবন কামনা করছি।

ডা. দীপংকর মন্ডল।
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ।
০৩.০৫.২০২৫

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুনঃ

এই ক্যাটাগরির আরো পোষ্টঃ
সর্বসত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com