৩০ দিন শরীর চর্চা চ্যালেঞ্জ ১২ তম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলব এখন। যথারীতি শরীর চর্চা শুরু করলাম। আজকে সপ্তাহের প্রথম দিন শনিবার। শরীর চর্চার আজকের রুটিনের অন্তর্ভুক্ত ছিল যে শরীর চর্চা গুলো তা হল স্কোয়াট, প্লাঙ্ক এবং স্ট্রেচিং। আজকে দুই একটি নতুন অভিজ্ঞতা হলো আমার। এবং শরীর চর্চা করতে করতে কিছু প্রশ্ন মনে আসলো। চলুন সেগুলো শেয়ার করা যাক।
প্রত্যেক দিনের মতো ওয়ার্ম আপ দিয়ে শুরু করলাম। এরপর আমি একে একে স্কোয়াট, প্লাঙ্ক এবং স্ট্রেচিং প্র্যাকটিস করলাম। প্রথম কথা এই প্র্যাকটিসগুলো সাধারণত তিনটি থেকে পাঁচটি সেট করে করতে হয়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে কখনো কখনো কোনো প্র্যাকটিস একটু এলোমেলো হয়েছে। অর্থাৎ কোনোটি হয়তো ৫ সেট করতে পেরেছি। কোনোটি হয়তো দুই সেট করেছি। কোনটি হয়তো তিন সেট করেছি, এরকম। প্রথমদিকে এইরকম হচ্ছে। আশা করি পরবর্তীতে আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে গেলে এগুলো ঠিক হয়ে যাবে।
প্র্যাকটিস করতে করতে একটা সময় আমার মনে হল আমি তো এই ৩৫ বছর বয়সে এসে শরীরচর্চা শুরু করছি। যদিও আরো অনেক আগে কিছু কিছু প্র্যাকটিস কখনো হয়তো করেছিলাম। কিন্তু সেগুলো ততটা জোরালো ছিল না। প্রকৃত অর্থে শরীরচর্চার মনোভাব নিয়ে শুরু করলাম এই ৩৫ বছর বয়সে এসে। তো আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ফ্লেক্সিবিলিটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে নেই বললেই চলে। অর্থাৎ বিভিন্ন বই পত্রে বা ভিডিওতে যেভাবে দেখছি মানুষ ফ্লেক্সিবল হয়ে এক্সারসাইজ করছে, আমার অঙ্গগুলো সেই রকম ফ্লেক্সিবল হচ্ছে না। তখন আমার মনে হল যে আসলে আরো অনেক আগে এই এক্সারসাইজটা শুরু করতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু তা তো সম্ভব হয়নি। তাই আমাকে এটা মেনে নিতেই হচ্ছে।
এটাকেই আমি নতুন অভিজ্ঞতা বলছি এই কারণে যে এটি প্রথম দিকে আমার মাথায় আসেনি। এক্সারসাইজ করতে করতে অনুশীলনের সময়ে বিষয়টি মাথায় এলো।
আজকে ৩০ মিনিটের মত এক্সারসাইজ করেছি। শরীর যথেষ্ট ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর মনে হচ্ছিল আমি মনে হয় এক্সারসাইজ কন্টিনিউ করতে পারবোনা একটানা ৩০ দিন। কেমন একটা অলসতা ভাব লাগছিল। মন বসছিল না শরীর চর্চায়। কিছুক্ষণ পর আমি ওজন মাপার যন্ত্রে আমার ওজনটা মেপে দেখলাম এখন ওজন ৬৩ কেজি আছে। যখন শরীরচর্চা শুরু করেছিলাম তখন ৬৬ কেজি ছিল। অর্থাৎ এই ১২ দিনে আমার ওজন ৩ কেজির মত কমেছে। তখন যেন মনোবল আরেকটু ফিরে পেলাম। এবং শরীরচর্চায় আবার মনোযোগ দিলাম। হঠাৎ করে এমন একটা অনুভূতি হল মনে হল আমি অবশ্যই পারবো! মনে হলো আসলেই কোন ক্ষুদ্র সফলতাও মানুষকে উদ্যম দেয় মনোবল দেয়, উদ্যম দেয় নতুন করে সফলতা এনেও দেয়। যাইহোক ৩০ মিনিট করার পর আজকের মত এই পর্যন্ত শেষ করলাম।
সমস্ত শরীর ঘেমে গিয়েছিল। একটি ভেজা গামছা দিয়ে শরীর মুছে নিলাম। আমি যেহেতু সকাল বেলা স্নান করে তারপরই সাড়ে ছয়টা শুরু করেছি। এবং প্রতিদিনই এই একই নিয়ম অনুসরণ করে থাকি। তাই এখন আর স্নান করবো না। এই ক্ষেত্রে মনে একটা প্রশ্ন আসলো-
অনেক ঘেমে যায়। তবুও সবশেষ কথা যিনি শরীর চর্চা করবেন তিনি তার সুবিধা এবং শরীরের প্রতিক্রিয়া বুঝে নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
প্রশ্নঃ কত বছর বয়সে একজন ব্যক্তির এক্সারসাইজ শুরু করা উচিত?
উত্তরঃ শরীর চর্চা শুরু করার প্রকৃত অর্থে কোন বয়স হয় না। পাঁচ বছর বয়স থেকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত যে কেউই শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী শরীর চর্চার বিভিন্ন আসন অনুশীলন করতে পারেন। তবে বয়স অনুযায়ী আসনের বিভিন্নতা থাকতে পারে। অর্থাৎ শারীরিক সকল পরিস্থিতিতে বা সকল বয়সেই সব রকম ব্যায়ামের অনুশীলন করা যায় না। এক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ শরীরচর্চা বিশারদ এর পরামর্শ গ্রহণ করা যেতে পারে।
প্রশ্নঃ শরীরচর্চা স্নান করার আগে করা উচিত নাকি পরে?
উত্তরঃ মূলত স্নান করার ব্যাপারটি নির্ভর করে নিজের পছন্দ ও অসুবিধার উপর। স্নান সেরে শরীর চর্চা করলে এক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। আবার শরীর চর্চার পরে স্নান করলে আরেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। তবে শরীর চর্চা করার পর স্নান করলে সেটি সব থেকে বেশি ভালো হয়। বিশেষ করে ভারী পরিশ্রমজনিত কোন শরীরচর্চার পর শরীর
আজকের মত এই পর্যন্তই। সকলের জন্য শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও শুভকামনা রইল। আগামীকালকের আপডেট জানাব।
ডা. দীপংকর মন্ডল।
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ।
১২.০৪.২০২৫