৩০ দিন শরীর চর্চা চ্যালেঞ্জ ১৩ তম দিনের অভিজ্ঞতা জানাব এখন। আজ রবিবার। সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে আজকে আমার শরীর চর্চার রুটিনে ছিল হাটা বা জগিং করা। আমি পূর্বেই বলেছি যে আমি প্র্যাকটিসের প্রথম দিকে সাধারণত ইনডোরেই আসনগুলো প্র্যাকটিস করছি। তাই হাটা বা জগিং করা এর কাছাকাছি অন্য যে সকল শরীরচর্চা আছে তার ভেতর থেকে আমি কয়েকটি প্রাকটিস বেছে নিলাম। বাট কিক, হাই নী, মার্চিং ইন প্লেস এই তিনটি এক্সারসাইজ আজ প্র্যাকটিস করব।
প্রত্যেক দিনের মতো ওয়ার্ম আপ করে শরীরকে এক্সারসাইজ এর জন্য রেডি করলাম। তারপর একে একে Butt kick, High knees এবং Marching in place ইত্যাদি এক্সারসাইজ গুলো কয়েক সেট করে করলাম।
বাট কিক, হাই নী ও মার্চিং ইন প্লেস এই তিনটি সহজ ও কার্যকর এক্সারসাইজ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনা এখন আমি তুলে ধরছি।
প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে তারপর পা থেকে হাটু পেছন পর্যন্ত বাঁকিয়ে গ্লুটস(নিতম্ব) কে যতটা সম্ভব স্পর্শ করানোর চেষ্টা করতে হবে। হাত দুটো প্রাকৃতিকভাবে আমরা যেভাবে দৌড়াই সেই ভঙ্গিতে নাড়াচাড়া করতে হবে। এইভাবে ৩০ সেকেন্ড প্র্যাকটিস করার পর কিছুটা সময়ের জন্য বিশ্রাম নিতে হবে।
✅ হ্যাঁ বাট কিক পায়ের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এটি আমাদের হ্যামস্ট্রিং ও কাফ মাসলকে ক্রিয়াশীল করে তোলে এবং ক্যালরি বার্ন করে। ফলে অতিরিক্ত চর্বি বার্ন হয়।
এই এক্সারসাইজটি করার ফলে হার্ট রেট দ্রুত বেড়ে যায়। পায়ের পেছনের দিকের পেশীকে শক্তিশালী করে। এই এক্সারসাইজটি নিয়মিত প্রাক্টিস করলে আমাদের দৌড়ানোর গতি আস্তে আস্তে বাড়ে।
একই জায়গায় দৌড়ানোর ভঙ্গিতে পর্যায়ক্রমে দুইটি হাঁটু একটি পর আরেকটি উঁচু করতে হবে। সাধারণত উরুর সমান্তরাল পর্যন্ত হাটুটি উঠবে। হাত দুটি স্বাভাবিকভাবে দৌড়ানোর মতো ভঙ্গিতে নাড়াতে হবে অথবা পায়ের সোজা সমান্তরাল বরাবর রাখতে হবে। এইভাবে একেকটি সেটে প্রায় ৩০ সেকেন্ডের মত প্র্যাকটিস করতে হবে।
✅ যেহেতু এটি একটি ফুল বডি কার্ডিও প্র্যাকটিস তাই এটি শুধু পেট নয় বরং আমাদের সমস্ত শরীরের থেকেই চর্বি কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত প্র্যাকটিসের ফলে আমাদের শরীরের ফ্যাট বার্ন হয় এবং মাসেল গেইন করা সম্ভব হয়।
এই অভ্যাসটি নিয়মিত প্র্যাকটিসের ফলে আমাদের কোর মাসেল শক্তিশালী হয়। শরীরের ভারসাম্য সমন্বয় হয়। এবং এটি মেটাবলিজমকে বৃদ্ধি করে।
এই প্র্যাকটিসটি সাধারণত হাই নী এর চেয়ে কিছুটা ধীর গতিতে করতে হয়। একই স্থানে দাঁড়িয়ে দুটি হাটু পর্যায়ক্রমে উঁচু নিচু করে প্রাকটিস করতে হয়। হাত দুটি এই সময় স্বাভাবিক ভাবে নাড়াচাড়া করতে হবে।
✅ অবশ্যই। এই এক্সারসাইজটি বয়স্কদের জন্য নিরাপদ। এই এক্সারসাইজটি লো-ইমপ্যাক্ট কার্ডিও হওয়ার কারণে বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য বা যাদের জয়েন্টে আর্থারাইটিস এর ব্যথা আছে তাদের জন্য খুব উপযোগী।
এই এক্সারসাইজটি নিয়মিত করার ফলে আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কম হয়। জয়েন্টের আর্থ্রাইটিস এর উপর খুব ভালো কাজ দেয়। যেহেতু প্র্যাকটিসটি করতে অল্প জায়গার প্রয়োজন হয় তাই অফিসে বিভিন্ন কাজের ফাঁকে বা বাড়িতে থেকে যেকোনো সময় ইচ্ছামতন প্র্যাকটিসটি করা যায়।
এই তিনটি এক্সারসাইজ নিয়মিত কিছুটা সময়ের জন্য হলেও প্র্যাকটিস করতে হবে। তবে এর সঙ্গে উপযুক্ত ডায়েট এর ব্যবস্থা রাখতে হবে। এই প্র্যাকটিস গুলো নিয়মিত করলে ওজন কমবে, স্ট্যামিনা বাড়বে এবং আমাদের পেশীগুলো শক্তিশালী হবে। জয়েন্টে যদি কারো ব্যথা থাকে সে ক্ষেত্রে তিনি ব্যস্তভাবে না করে বরং ধীরে ধীরে এক্সারসাইজটি প্র্যাকটিস করবেন।
শরীর চর্চার প্র্যাকটিস গুলো ধারাবাহিকভাবে যথাসম্ভব করে যেতে পারাতে আমার কিছুটা মনোবল বেড়েছে। আমার প্রথম উদ্দেশ্য হচ্ছে এই ৩০ দিন যথাসম্ভব নিয়মিত প্র্যাকটিস অভ্যাস করা করা। ইচ্ছা আছে এরপরেও ধারাবাহিকভাবে প্র্যাকটিস চালিয়ে যাওয়ার। এবং এর সঙ্গে সঙ্গে যোগাসনের কিছু প্র্যাকটিস করার ইচ্ছা আছে।
সকলের জন্য শ্রদ্ধা ভালোবাসা শুভকামনা জানিয়ে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আগামীকালকের আপডেট জানাব।
আগের পর্বঃ ৩০ দিন শরীর চর্চা চ্যালেঞ্জ ১২ তম দিনের অভিজ্ঞতা
ডা. দীপংকর মন্ডল।
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ।
১৩.০৪.২০২৫