৩০ দিন শরীর চর্চা চ্যালেঞ্জ ৯ম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে আজকে কথা বলব! গত ৮ দিন নিয়মিত বিভিন্ন শরীর চর্চার অনুশীলনের মাধ্যমে শরীরকে সক্রিয় রাখার পর আজকে ছিল বিশ্রামের দিন। তবে সম্পূর্ণ বিশ্রাম না করে আমি বেছে নিয়েছি হালকা স্ট্রেচিং করার সিদ্ধান্ত। কেননা স্ট্রেচিং প্র্যাকটিসগুলো আমাদের পেশীর ক্লান্তি দূর করে পেশীর নমনীয়তা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও আমরা মানসিক এবং শারীরিকভাবে রিফ্রেশ অনুভব করি।
সময়ঃ ২৫ মিনিট।
শরীর চর্চার ধরনঃ হালকা স্ট্রেচিং।
১) কোয়াড স্ট্রেচিং(Quad Stretching)
২) হিপ স্ট্রেচিং(Hip Flexor Stretch)
৩)রোটেশনাল নেক স্ট্রেচিং(Neck Rotation Stretch)
৪) আর্ম সার্কেল(Arm Circles)
৫) সোল্ডার সার্কেল(Shoulder Rolls)
৬)বেন্ডিং স্ট্রেচিং(Forward Bend Stretch)
৭) কিক স্ট্রেচিং(Leg Kick Stretch)
কোয়াড স্ট্রেচিং (Quad Stretching): কীভাবে প্রাকটিস করলামঃ এই প্র্যাকটিসটি দুটি পায়েই আলাদা আলাদা ভাবে করতে হয়। প্রথমে ডান পায়ের উপর দাঁড়িয়ে বাম পা কে পিছন দিকে মুড়ে পায়ের পাতা হাত দিয়ে ধরে সোজা হয়ে দাঁড়ালাম। এভাবে ১৫ সেকেন্ড চর্চার পর একইভাবে অন্য পায়ের উপর প্র্যাকটিস করলাম।
অনুভূতিঃ উরুর সামনে প্রথমে টান টান অনুভব হলেও আস্তে আস্তে সেটা কম হয়েছিল।
কীভাবে করলামঃ লাঞ্জ পজিশনে এগিয়ে গিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে হিপ কে নিচে নামিয়ে ফেললাম এবং ১০ সেকেন্ডের মত ধরে রাখলাম।
আমার অনুভূতিঃ এই প্র্যাকটিস টি হিফ জয়েন্ট এবং কোর মাসেল এর আড়স্টতা এবং জড়তা কাটাতে সাহায্য করেছিল।
কীভাবে করলামঃ ধীরে ধীরে মাথাটা উপরের দিকে তুলে উপরের দিকে তাকিয়ে থাকলাম ১০ সেকেন্ডের মত। তারপর ধীরে ধীরে আবার মাথাটা নামিয়ে নিচের দিকে ১০ সেকেন্ডের মত তাকিয়ে থাকলাম। এভাবে পাঁচটি সেট করলাম।
আমার অনুভূতিঃ এই প্র্যাকটিসটি করলে ঘাড়ের আড়ষ্টতা এবং শক্ত ভাব(স্টিফ নেক) কিছুটা কমে যায় এবং ঘাড়ের নমনীয়তা রক্ষা করে।
কীভাবে করলামঃ দুটি হাতকে সোজা করে ঘড়ির কাটার দিকে অর্থাৎ সামনের দিকে ১০ বার ঘোরালাম। ঠিক একই ভাবে পুনরায় উল্টা দিকে অর্থাৎ পেছনের দিকে দুটি হাত ১০ বার ঘোরালাম।
আমার অনুভূতিঃ কাঁধ এবং স্কন্ধ খানিকটা হালকা হয়ে আসলো এই প্র্যাকটিসটি করার পর।
কীভাবে করলামঃ এই প্র্যাকটিসকে তিনটি ভাবে করা যায়। Back bending, Front bending, Side bending.
কোমর পর্যন্ত পা সোজা রেখে একবার সামনের দিকে একবার পেছনের দিকে একবার ডান পাশ এবং বাম পাশ উভয় দিকে যতটা সম্ভব বেঁকে এই প্র্যাকটিসটি করতে হয়।
আমার অনুভূতিঃ হ্যামস্ট্রিং ও পিঠের পেশি প্রসারিত হওয়ার ফলে এই পেশী গুলোর উপর সুন্দর এক্সারসাইজ হয়।
কীভাবে করলামঃ সোজা হয়ে এক পায়ের উপর দাঁড়িয়ে অন্য পা টা সামনে ও পেছনে সুইং করতে হয়।
প্রত্যেকটি পায়ের জন্য ১০ বার করে প্র্যাকটিসটি করলাম।
আমার অনুভূতিঃ কিক স্ট্রেচিং প্র্যাক্টিস এর ফলে পায়ের পেশীতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি হাওয়াতে খানিকটা রিল্যাক্সড ফিল হল।
শেষ করার পরঃ স্ট্রেচিং শেষে কিছুটা সময় অন্তত ৫ মিনিট শবাসনে বিশ্রাম করা উচিত ছিল। কিন্তু আজকের প্রাকটিসে সেটি করা সম্ভব হয়নি। তবে প্র্যাকটিসের পর পুরো শরীর হালকা ও রিল্যাক্সড লেগেছে এবং বিশেষ করে মানসিক অবস্থাও ভালো লেগেছিল। প্র্যাকটিস ধারাবাহিকভাবে সম্পন্ন করতে চেষ্টা করছি এবং কিছুটা সফল হয়েছি এটি ভেবে উৎসাহ বেড়েছিল।
কিছু পরামর্শঃ স্টেচিং প্র্যাকটিসের সময় কখনই জোর করে কোন অঙ্গ কে বা পেশীকে বাঁকানো উচিত নয়। ধীরে ধীরে বেশি কে প্রসারিত করতে হবে। শরীরের কোন অঙ্গে যেন চোট না লাগে সেদিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। স্ট্রেচিং এর সময় শ্বাস-প্রশ্বাস যথাসম্ভব স্বাভাবিক রাখতে হবে। শরীরে হাইড্রেশন এর যেন কোন ঘাটতি না হয় তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করতে হবে এবং যথা সম্ভব পুষ্টিকর আহার করার দিকে সতর্ক নজর রাখতে হবে।
৩০ দিন শরীর চর্চা চ্যালেঞ্জ ৯ম দিনের আজকের প্র্যাকটিস এ পর্যন্ত। আগামীকাল আবারো কথা হবে। সকলের জন্য শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও শুভকামনা রইল।
আগের পর্বঃ ৩০ দিন শরীর চর্চা চ্যালেঞ্জ ৮ম দিনের অভিজ্ঞতা
ডা. দীপংকর মন্ডল।
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ।
০৮.০৪.২০২৫