সিউডো সোরা, স্ক্রফিউলা, কনজামশন ও স্ট্রুমা কাকে বলে?

0
214
সিউডো কথাটির অর্থ হলো মিথ্যা। অতএব সিউডো সোরা হলো মিথ্যা বা কৃত্রিম সোরা। অর্থাৎ যখন কোন ব্যক্তিতে প্রকাশিত লক্ষণ রূপগত ভাবে সদৃশ অর্থাৎ সোরা বলে ভ্রম হয় তখন তাকে সিউডো সোরা(Pseudo Psora) বলে।

সিউডো সোরা কি?

মূলত এই সিউডো সোরা প্রকৃত সোরা নয়। বরং আদি রোগ জননী সোরার সঙ্গে অর্জিত সিফিলিস এর সংমিশ্রিত লক্ষণ মাত্র। এরূপ সংমিশ্রণ অবস্থায় সিফিলিস কে বিসদৃশ স্থুল চিকিৎসা দ্বারা চাপা দিলে, যে গভীর ধাতুগত দোষের সৃষ্টি হয় তাকে Pseudo Psora বলে।
সিউডো সোরা ছবি
সিউডো সোরা ছবি
স্ক্রফিউলাঃ
এই স্ক্রফিউলা দোষও একপ্রকার Pseudo Psora র রূপান্তর। কেননা এক পুরুষে যখন নিজ জীবনে অর্জিত সিফিলিস রোগ সোরার সঙ্গে মিশ্রিত হয় এবং তা চাপা পড়ে, তখন তাকে Pseudo Psora বলে। কিন্তু এই একই পরিস্থিতি যখন দোষগত আকারে ব্যক্তির বংশধরেরা বা তার সন্তান-সন্ততিরা প্রাপ্ত দোষ আকারে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হয় তখন তাকে স্ক্রফিউলা বলে। স্ক্রফিউলা দোষ স্থুল ঔষধ দ্বারা চাপা পড়লে রোগীর দেহের গ্রন্থিসমূহ, বিশেষ করে লসিকাগ্রন্থি আক্রান্ত হয়। এই পরিস্থিতি টিউবারকুলোসিসের পূর্বাবস্থা। পিতৃদেহের বা বংশানুক্রমিক Pseudo Psora, সন্তানদের টিউবারকুলোসিস এর কারন হয়। তাই বলা যায় বংশানুক্রমিক সিউডো সোরার প্রবাহের চূড়ান্ত পরিণতি হলো সন্তানদের টিউবারকুলোসিস।
সিউডো সোরা, নাকি স্ক্রফুলা কোনটি অধিক বিপদজনকঃ-
উত্তরঃ
স্ক্রফিউলা দোষ Pseudo Psora হতে বেশী বিপদজনক। কারণ ব্যক্তি তার নিজ জীবনে সিফিলিস অর্জন করে বিসদৃশ চিকিৎসা দ্বারা চাপা দিলে তা উক্ত রোগীর শরীরে যে দোষ সৃষ্টি হয় তাই Pseudo Psora। এই সিউডো সোরা থেকে পরিত্রান সম্বভ। কেননা যদি সদৃশ বিধান অনুযায়ী উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়, তাহলে ব্যক্তির চাপাপড়া লক্ষণসমূহের পুনরাবির্ভাব করানো যায় এবং লক্ষণ সাদৃশ্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় রোগীকে সম্পূর্ণ আরোগ্য করা যায়। কিন্তু যে ক্ষেত্রে দোষটি ‘প্রাপ্ত দোষ’ আকারে সন্তানদের দেহে স্ক্রফিউলায় পর্যবসিত হয়, সেক্ষেত্রে সন্তানদের দেহে আর পিতৃদেহে চাপাপড়া দোষের অবস্থাসমূহের পুনরাবির্ভাব সম্ভব হয় না। তাই দেখা যায় যে স্ক্রফিউলা দোষই বেশী বিপদজনক সিউডো সোরা থেকে।
সাইকো সোরাঃ
সোরার সাথে যখন সাইকোটিক প্রাধান্যযুক্ত টিউবারকুলার দোষ সংমিশ্রিত হয়ে যে পরিস্থিতিতে বয়স্ক ব্যক্তিদের শরীরে শুষ্কতা ও শীর্ণতাযুক্ত ক্ষয় উৎপাদন করে তাকে সাইকো সোরা বা ‘কনজামশন’ বলে। এই কনজামশন অবস্থায় একটি ক্রমিক শীর্ণতা দেখা দেয় এবং রোগীকে টিউবারকুলোসিস এর দিকে ধাবিত করে‌।
স্ট্রুমাঃ
সোরার সাথে সাইকোটিক এর প্রাধান্যযুক্ত সংমিশ্রিত কনজামশন শিশুদেহে পরিস্ফুট হয়ে রিকেটের ন্যায় শুষ্কতা ও শীর্ণতি তৈরি করে তখন তাকে স্ট্রুমা বলে।
Previous articleহোমিওপ্যাথির ৭টি মৌলিক নীতি
Next articleহোমিওপ্যাথিতে সার্জারির ভূমিকা
Dr. Dipankar Mondal
হোমিওপ্যাথিক নীতি অনুযায়ী রোগীর সামগ্রীক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দ্বারাই জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। জীবনযাপনের ভুল অভ্যাস থেকে সৃষ্ট রোগ, সংযম ব্যতীত শুধুমাত্র ঔষধ সেবনের দ্বারা প্রতিরোধ বা আরোগ্যের আশা করা বাতুলতা মাত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here