সংক্ষেপে সেলেনিয়াম হোমিও ঔষধ এর মুলভাব

0
121
সেলেনিয়াম হোমিও ঔষধ টি গ্রীষ্মকালীন স্নায়বিক লক্ষণ বৃদ্ধিকারি সর্বদোষঘ্ন রেমিডি। সালফার এর সঙ্গে বহু বিষয়ে সাদৃশ্য থাকলেও এই ওষুধটি সালফার অপেক্ষা বহুলাংশে অগভীর বা হীনবল প্রকৃতির।

দুর্বলতাঃ সেলিনিয়ামের প্রধান বৈশিষ্ট্য দুর্বলতা ও অবসাদ(আর্সেনিক, চায়না, এসিড ফস, সোরিনাম- সোরি-ক্ষুধিশূন্য ও দুর্বল পাকস্থলী কেন্দ্রিক। সেলিনিয়াম ক্ষুধাযুক্ত কিন্তু দুর্বল। স্নায়বিক দুর্বলতা।

সেলিনিয়াম এর রোগী কেবলই শুয়ে দিন কাটাতে চায়। স্ফূর্তিহীন।

সেলিনিয়াম হোমিও ঔষধ ছবি
হোমিও ঔষধ ছবি

গ্রীষ্মকালেই সেলেনিয়ামের দুর্বলতা সবচেয়ে বেশি হয়। (সেলি- নিদ্রার পর ও গ্রীষ্মকালে সঙ্গমশক্তির লোপ পায়)

নিউমোনিয়া, টাইফয়েড জ্বর বা দীর্ঘকাল ব্যাপী রোগভোগের পর আবির্ভূত দুর্বলতা সহজে যেতে চায় না সেখানে উপযোগী।

এই দুর্বলতা সার্বদৈহিক এবং সূর্যের সাথে সম্বন্ধযুক্ত। সূর্যাস্তের পর এবং রাত্রে সে বেশ সুস্থ ও সবল বোধ করে(নেট্রাম মিউর, নেট্রাম কার্ব, ল্যাকেসিস, এপিএস মেল, সালফার)।

ল্যাকে: সর্বপ্রকার উত্তাপ-(সূর্য তাপ, অগ্নি তাপ, গ্রীষ্মের প্রখর উত্তাপ)
নেট্রাম মিউর ও নেট্রাম কার্ব- যে কোন প্রকার তাপেই এদের প্রধানত শিরঃপীড়া বৃদ্ধি পায়।

 

কোন কোন সময় সাংঘাতিক জাতীয় রোগ ভোগ হেতু সোরিণামের ক্ষুধা, ক্যাডমিয়াম সালফের পরিপাক শক্তি, এবং চায়নার সজীবতা জ্ঞাপক উত্তাপটি(Vital Heat) যেমন সহজে ফিরে পায় না, সেইরূপ সেলিনিয়ামের অন্ত্র মধ্যে প্রচুর মল সঞ্চয় সত্ত্বেও কৃত্রিম বা যান্ত্রিক উপায় অথবা আঙ্গুলের সাহায্য ব্যতিরেকে(Mechanical Aid) কিছুতেই মলবেগ আসতে বা মল বের হতে চায় না। হলে রোগী নিরতিশয় কোষ্টকাবদ্ধ হয়ে ওঠে।

মনঃ মনটি দারুন অবসাদগ্রস্থ। রোগী একেবারে ধ্বজভঙ্গ এবং সঙ্গম কার্যে অক্ষম। কিন্তু মনটা সর্বদাই কাম ভাবে আচ্ছন্ন(স্ট্যাফিসেগ্রিয়া- মেজাজ বড়ই খারাপ। অতি সহজেই চটে যায়। কিন্তু ক্রোধটি প্রকাশ করতে পারেনা। মনে রাগ চেপে রাখা তার অভ্যাস। ফলে এর প্রতিক্রিয়ায় তার নানা রোগলক্ষণ এর আবির্ভাব হয়।

লাইকোতেও ধ্বজভঙ্গ বিকালে শিরঃপীড়া বৃদ্ধি ও কোষ্ঠবদ্ধ আছে, কিন্তু সেলেনিয়ামের অবসাদ ও সূর্য তাপে বৃদ্ধি এই লক্ষণ লাইকোতে নেই। তাছাড়া লাইকোর মনোমধ্যে সর্ব সময়ের জন্য কামভাবটি বিরাজ করে না।

সেলেনিয়াম এর শুক্রধাতু অত্যন্ত তরল।

চায়না ও ফসফরিক এসিড উভয়েই সেলেনিয়াম এর ন্যায় গরমকাতর, ঘর্মবহুল এবং অতিশয় দুর্বল। চায়না এবং এসিড ফস এর দুর্বলতা জীবনীয় তরল পদার্থVital fluid) রক্ত, শুক্র, ধাতু, মল, ইত্যাদির অতিমাত্রায় ক্ষয় হেতুই এসে থাকে।

মদ্যাকাঙ্খা এবং দৈহিক অক্ষমতা সত্ত্বেও সঙ্গম বিষয়ক কুৎসিত চিন্তা ধারায় রোগী একেবারে পাগল হয়ে ওঠে। স্মৃতিশক্তিহীনতা। সঙ্গমশক্তি লাভের আশায় সে মদ্যাদি, নানা প্রকার উত্তেজক দ্রব্য ও পেটেন্ট ঔষধ সেবন করতে থাকে।

চায়না ও সেলেনিয়াম পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন। সেলেনিয়ামের পর সালফার কখনো প্রয়োগ করতে নেই। মার্কুরিয়াস বা সালফারের দ্বারা অবরুদ্ধ অর্থাৎ চাপা-পড়া চর্মপীড়ার কুফলটি নষ্ট করতে অনেক সময় সেলেনিয়ামের প্রয়োজন হয়।

চুল ওঠা, বাম প্বার্শগত শিরঃপীড়া রৌদ্রে বৃদ্ধি, শুক্রপতন, নিদ্রায়, স্বপ্নে, চলতে চলতে, প্রস্রাব কিংবা বাহ্যের বেগের সাথে তরল শুক্র যায়। চোখমুখ বসে যায়। স্বরযন্ত্রের পক্ষঘাত(গান বা বক্তৃতা করার পর গলা ধরা- আর্জেন্ট নাইট, কষ্টিকাম।

টাক পোকাঃ গোঁফ, ভ্রু এবং লিঙ্গস্থান এর চুল উঠে যায়।

সেলেনিয়াম এর উচ্চশক্তি খুব সুন্দর কাজ করে। ২০০ নিচে প্রয়োজন হয় না।

ক্রিয়া স্থিতীকালঃ ৪০ দিন।

বিঃদ্রঃ আমি এই পোস্টটি লিখতে ডা. এম. ভট্টাচার্য এর পুরাতন দোষের পরিচয়  ও তাহার চিকিৎসা নামক গ্রন্থ, ডা. এলেন এর কীনোটস, ডা. এন.  সি ঘোষ এর কম্পারেটিভ মেটিরিয়া মেডিকা ইত্যাদি থেকে সহায়তা নিয়েছি। সকল শ্রদ্ধাভাজন চিকিৎসকের প্রতি শ্রদ্ধা অর্পন করছি।

Previous articleযক্ষা রোগের বিস্তারিত এবং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
Next articleবিএমআই ক্যালকুলেটর: নিজের BMI কিভাবে বের করবো?
Dr. Dipankar Mondal
হোমিওপ্যাথিক নীতি অনুযায়ী রোগীর সামগ্রীক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দ্বারাই জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। জীবনযাপনের ভুল অভ্যাস থেকে সৃষ্ট রোগ, সংযম ব্যতীত শুধুমাত্র ঔষধ সেবনের দ্বারা প্রতিরোধ বা আরোগ্যের আশা করা বাতুলতা মাত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here