পুরুষের মতো মহিলাদের মুখে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি লোম দেখা দিলে তাকে হিরসুটিজম বলা হয়। বংশগত কারণেই এমনটি বেশি হয়ে থাকে। লোমের পরিমাণ অথবা প্রকৃতি বিভিন্ন জনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের হতে পারে।
হিরসুটিজম কেন হয়?
ধরে নেয়া হয়, মহিলাদের শরীরে অ্যান্ড্রোজেন নামক হরমোনের আধিক্যই এ রোগের কারণ। এই এন্ড্রোজেন মূলত পুরুষ দেহে বিদ্যমান একটি হরমোন। তবে মহিলাদের শরীরেও এ হরমোন অল্পমাত্রায় বিদ্যমান থাকে।
কোনো কারণে যদি এ হরমোনের মাত্রা মহিলাদের শরীরে বেড়ে যায় তাহলে মহিলাদের শরীরে এ রকম অতিরিক্ত মাত্রায় গোঁফ-দাড়ি গজাতে থাকে। তা ছাড়া শরীরে এন্ড্রোজেন জাতীয় হরমোনের কার্যক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে বা বিরত রাখতে পারে এমন প্রোটিনজাতীয় একটি পদার্থের স্বল্পতার কারণেও এ রকম অবস্থায় সৃষ্টি হতে পারে।
এই প্রোটিনের সঠিক মাত্রা আমাদের দেশে খুব সহজেই এখন ল্যাবরেটরিতে নির্ণয় করা যায়। মানুষের শরীরে অনেক গ্রন্থি থাকলেও এর জন্য মূলত দু’টি গ্রন্থিকেই দায়ী করা হয়। তার একটি হলো এডরিনাল নামক গ্রন্থি, যা কিনা কিডনির উপরিভাগে অবস্থিত থাকে।
আরেকটি হলো নারীর দেহের ডিম্বাশয় বা ওভারি। এই দু’টি গ্রন্থির কোনো রোগের কারণেই সাধারণত এ রকম অতিরিক্ত লোম গজিয়ে থাকে।
USG করালে সাধারণত মেয়েদের অনেকের ক্ষেত্রে ওভারিয়ান সিস্ট থাকতে দেখা যায়। এটি তেমন জটিল কিছু নয় এবং সঠিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সহজেই এটি আরোগ্য হয়।
তবে সমস্যা হয় যখন এটি পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ এ রুপান্তরিত হয়ে যায়। তখন গর্ভধারণ এ সমস্যা হয়।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রমে যে সিম্পটমস গুলো দেখা যায়ঃ
১) সাধারণত অনিয়মিত মাসিক দেখা যায়।
২) মাসিকের সময় প্রচন্ড পেটে ব্যথা হয়।
৩) মুখে অবাঞ্ছিত দাড়ি গোঁফ গজাতে দেখা যায়।
এর ভেতরে অন্তত দুটি সিমটম্স ও যদি কারো ক্ষেত্রে পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে PCOD এর সম্ভাবনা অধিক। আল্ট্রাসনোগ্রাম করে অবশ্যই এটি নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
এটির খুব সুন্দর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা আছে। তবে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা করালে ভালো হয়।
আরো পড়ুনঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানোর উপায় কি?