আজকের আলোচনা তে আমি হোমিওপ্যাথিতে লোশন প্রস্তুত প্রণালী বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। চলুন তবে মূল আলোচনাতে প্রবেশ করা যাক।
হোমিওপ্যাথিতে অনেক ক্ষেত্রে ঔষধের বাহ্য প্রয়োগ নিষিদ্ধ হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের মূল অরিষ্টের স্থানীয় প্রয়োগ হিতকারী ও আবশ্যক হয়। যেমন কোথাও হঠাৎ আহত হলে বা হঠাৎ কোথাও কেটে গেলে রক্ত বন্ধ করতে ঔষধের বাহ্যপ্রয়োগ আবশ্যক হয়।
হোমিওপ্যাথিতে লোশন প্রস্তুত প্রণালীঃ
ঔষধের ১ ভাগ মূল অরিষ্টের সাথে ১০ ভাগ বিশুদ্ধ জল মিশ্রিত করলে লোশন তৈরি হয়। তবে এটির ভিন্নতা আছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ঔষধ ও পানির অনুপাতের পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। যেমন কখনো যদি কেটে যাওয়া স্থানের রক্তপাত অধিক পরিমাণে হতে থাকে বা রক্তপাত বন্ধে বিলম্ব হয় তবে ঔষধের অনুপাত এর পরিমাণ বাড়াতে হতে পারে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তখন হালকা মিশ্রণ ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ ২৫ ভাগ বিশুদ্ধ জলের সাথে ১ ভাগ ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। মুখের ভেতর বা যোনীর ভেতর লোশন ব্যবহার করতে হলে হালকা লোশন ব্যবহার করায় কর্তব্য। অর্থাৎ ১ ভাগ ঔষধের সাথে ২৫ ভাগ পরিমাণ পানি দ্বারা প্রস্তুত লোশন।
হোমিওপ্যাথিক লোশন প্রস্তুতের ক্ষেত্রে নানাবিধ প্রণালী দ্বারা ভিন্নতা পাওয়া যায়। যেমন কেউ কেউ দশভাগ পানিতে এক ভাগ মূল অরিষ্ট। কেউ আবার ৯ ভাগ পানির সাথে এক ভাগ মূল অরিষ্ট। আবার কেউবা ২৫ ভাগ পানিতে এক ভাগ ঔষধের মূল অরিষ্ট ব্যবহার করে থাকেন। কেউ কেউ এক আউন্স জলের ভেতর ১০ বা ১৫ ফোটা মূল অরিষ্ট ব্যবহার করে থাকেন। কেউবা এক কাপ জলে ৫ থেকে ১০ ফোঁটা মাত্রায় ঔষধ ব্যবহার করেন। মহামতি ডাঃ কেন্ট ৪ থেকে ৬ আউন্স পানির সাথে নির্বাচিত ঔষধের এক ভাগ মূল অরিষ্ট মিশ্রিত করে হোমিওপ্যাথিক লোশন প্রস্তুত করতে বলেছেন। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে হালকা লোশন ব্যবহার করাই উত্তম।
তবে এই প্রকার ভিন্নতা থাকা সত্বেও পরিস্থিতি বিবেচনায় সহজেই হোমিওপ্যাথিক ঔষধের উপাদানের পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব। সাধারণত উষ্ণ গরম পানিতে হোমিওপ্যাথিক লোশন প্রস্তুত করলে তাতে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায়, আকস্মিক দুর্ঘটনায় ইত্যাদি ক্ষেত্রে টিউবলের বিশুদ্ধ পানি বা পরিচ্ছন্ন পুকুরের ঠান্ডা পানি দ্বারাও কাজ চালানো যায়। তবে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে যেন ঔষধ প্রস্তুতকালে কখনো কোন উপাদানের সঙ্গে কর্পুরের সংমিশ্রণ না ঘটে। কেননা কর্পূর প্রায় সমস্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ক্রিয়া নষ্ট করে থাকে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় কখনো লোশন ব্যবহার করা সম্ভব না হলে উক্ত ঔষধের লোশন দ্বারা বস্ত্রখণ্ড ভিজিয়ে তা দ্বারা আক্রান্ত স্থানে ব্যান্ডেজ দিতে হবে। প্রয়োগের আগে আক্রান্ত স্থান উষ্ণ গরম জল দ্বারা পরিষ্কার করে ধৌত করে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে দুর্ঘটনার এসব লোশন ব্যবহার করে রোগজনিত প্রাথমিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যেতে পারে। তবে রোগীকে ভেতর থেকে নির্মূল করে রোগীকে সুস্থ করতে অবশ্যই শক্তিকৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ অভ্যন্তরীণভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ রক্ত পরীক্ষা রিপোর্ট কিভাবে পড়তে হয়?