হোমিওপ্যাথিতে সার্জারির ভূমিকা

0
243

আজকের আলোচনাতে আমি হোমিওপ্যাথিতে সার্জারির ভূমিকা বিষয়ে আলোচনা করব। অনেক রোগের ক্ষেত্রেই আশু সার্জারির প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

সার্জারি কাকে বলেঃ

অস্ত্রোপচার দ্বারা রোগীদেহের পিড়িত কোষকে অপসারণ বা সুস্থ কোষ বা প্রত্যঙ্গের প্রতিস্থাপন করাকে সার্জারি বলে। অর্থাৎ পিড়িত রোগীদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংস্থাপন, অপসারণ বা মেরামত করা হলে তাকে সার্জারি বলে।

হোমিওপ্যাথিতে সার্জারির ভূমিকাঃ

সদৃশ বিধান অনুসারে চিকিৎসা করে রোগীকে নির্মল আরোগ্য করাই হোমিওপ্যাথির সারকথা। কারণ অস্ত্র বা অন্য কোন পদ্ধতি দ্বরা রোগ লক্ষণ বিসদৃশ পন্থায় অপসারিত হলে মূল রোগটি চাপা পড়ে যায় এবং রোগীদেহে অন্যান্য রোগ সৃষ্টি করে থাকে। তাই হোমিওপ্যাথিতে যথাসম্ভব কনস্টিটিউশনাল বা ধাতুগত চিকিৎসা দ্বারা রোগ আরোগ্য করা হয়ে থাকে। তবে চিকিৎসাক্ষেত্রে উদ্ভূত কিছু পরিস্থিতিতে যখন রোগী আরোগ্যকল্পে অস্ত্রোপচার ছাড়া ভিন্ন কোনো পথ থাকে না, সে ক্ষেত্রে বৃথা ঔষধ সেবন করে কালক্ষেপন না করে সার্জারির ব্যবস্থা নিতে হবে।
হোমিওপ্যাথিতে সার্জারি ছবি
হোমিওপ্যাথিতে সার্জারি ছবি
এসব ক্ষেত্রে দ্রুত বা তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করতে পারলে রোগীর অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। যেমন কোন রোগীর যদি আঘাতাদির কারণে শরীরের ভেতর হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় বা ভেঙে যায় বা ছিলে গিয়ে মাংসপেশি, শিরা, স্নায়ু ইত্যাদি ছিড়ে যায় বা মারাত্মক জখম হয়, তখন প্রয়োজন অনুযায়ী অবশ্যই তাৎক্ষণিক সার্জারির ব্যবস্থা করতে হবে। পরবর্তীতে সাদৃশ্য বিধান অনুসারে ঔষধ সেবন করা যায়। এতে রোগী আরোগ্য হয়ে থাকে।
এছাড়াও যদি বহিরাগত কোন পদার্থ বা বস্তু প্রবিষ্ট হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রেও প্রয়োজন অনুযায়ী রোগীদেহে প্রবিষ্ট বস্তু বা ফরেন বডি অপসারণে সার্জারির ব্যবস্থা নেওয়া আবশ্যক। এজাতীয় পরিস্থিতিতে হোমিওপ্যাথি যথাসম্ভব দ্রুত সার্জারির মাধ্যমে রোগীর রোগ যন্ত্রণা লাঘবের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণে অবহেলা করে না।
উপরোক্ত আলোচনায় হোমিওপ্যাথিতে সার্জারির গুরুত্ব আলোচনা করা হয়েছে। এবং কোন কোন পরিস্থিতিতে হোমিওপ্যাথিতে সার্জারির আবশ্যকতা হয় তা দেখানো হয়েছে। সাধারণ লোকের ধারণা এই যে হোমিওপ্যাথিতে সার্জারির কোন ব্যবস্থা নাই। কিন্তু বাস্তবে তা নয়।প্রয়োজন অনুযায়ী রোগীর সুস্বাস্থ্য রক্ষাকল্পে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে হোমিওপ্যাথিতে সার্জারির সুব্যবস্থা রয়েছে। এবং এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ যে, একজন আদর্শ হোমিওপ্যাথের সার্জারি বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকতে হবে। একজন চিকিৎসককে জরুরি মুহূর্তে অবশ্যই সার্জিক্যাল কেসগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে সার্জারি করার জন্য পরামর্শ ও সহযোগিতা করতে হবে।
Previous articleসিউডো সোরা, স্ক্রফিউলা, কনজামশন ও স্ট্রুমা কাকে বলে?
Next articleবস্তুর অবিনাশিতাবাদ ও শক্তির নিত্যতার সূত্র
Dr. Dipankar Mondal
হোমিওপ্যাথিক নীতি অনুযায়ী রোগীর সামগ্রীক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দ্বারাই জটিল, কঠিন ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। জীবনযাপনের ভুল অভ্যাস থেকে সৃষ্ট রোগ, সংযম ব্যতীত শুধুমাত্র ঔষধ সেবনের দ্বারা প্রতিরোধ বা আরোগ্যের আশা করা বাতুলতা মাত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here