আজকের আলোচনা তে আমি Cystitis এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। চলুন তবে মূল আলোচনাতে প্রবেশ করা যাক।
Cystitis কি?
সিস্টাইটিস একটি মূত্রথলি(urinary bladder) অথবা মূত্রনালীর সংক্রমণ বা প্রদাহ বিশেষ। সাধারণত মহিলাদের ক্ষত্রেই এই রোগটি তুলনামূলক বেশি হতে দেখা যায় পুরুষদের তুলনায়।
সিস্টাইটিস রোগে মূত্রনালীর ইনফেকশন হওয়ার কারণে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও প্রদাহ হয়ে থাকে।
Cystitis এর কারণঃ
সিস্টাইটিস রোগের আভ্যন্তরীণ ও সূক্ষ্ম রোগবীজ জাত কারণ হিসেবে সিফিলিটিক মায়াজম কে নির্দেশ করা যায়।
আর বাহ্যিক কারণ হিসেবে বলা যায় এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া যা urinary tract এ ইনফেকশন তৈরি করে। আর এই ব্যাকটেরিয়া urinary tract এ প্রবেশের মুখ্য পথগুলো-
১) অপরিচ্ছন্ন সহবাস অথবা সহবাসের পর পরিচ্ছন্নতার অভাব।
২) গর্ভনিরোধের জন্য ডায়াফ্রাম এর ব্যবহার।
৩) মূত্রদ্বার ওর যোনির ভেতর অপরিচ্ছন্ন রাখা ও নিয়মিত পরিষ্কার না করা।
৪) ডায়াবেটিস থাকলে সহজেই ব্যাকটেরিয়াগুলো আক্রমণের সুযোগ পায়।
৫) গর্ভবতী অবস্থায় মূত্র নালীতে ইনফেকশন এর সম্ভাবনা বেশি থাকে।
সাধারণত পুরুষের তুলনায় মহিলারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি তার কারণ হলঃ
মহিলাদের মালদ্বার এবং মূত্রনালীর অবস্থান খুব কাছাকাছি এবং মহিলাদের মূত্রনালী খুব ছোট তাই ব্যাকটেরিয়া মূত্রদ্বারের ভেতর সহজেই প্রবেশের সুযোগ পায় এবং অতি দ্রুত urinary bladder ও urinary organs পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
Cystitis রোগের সিম্পটমসঃ
১) সাধারণত প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও বেদনা হয়।
২) ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসে ও প্রস্রাবের বেগ আসলে দেরি করতে পারেনা।
৩) প্রস্রাব ঘোলাটে বর্ণের হতে পারে ও প্রস্রাবে প্রচন্ড দুর্গন্ধ থাকে।
৪) তলপেট জোড়া বেদনা হতে পারে।
৫) প্রচন্ড দুর্বলতা ও ক্লান্তি বোধ হয়।
৬) ক্ষুধা কমে যায় ও বমির ভাব হয়।
৭) অনেক সময় প্রস্রাবের সাথে রক্ত যেতে পারে।
Cystitis রোগের ভাবীফলঃ
সাধারণত মহিলাদের ক্ষেত্রে acute cystitis দুই থেকে চার দিনের ভিতরে এমনিতেই ভালো হয়ে যায় কোন ঔষধ সেবন ব্যতিরেকে। তবে যদি দুই থেকে চার দিন পরেও রোগ আরোগ্যমুখী না হয় তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের সাথে consult করতে হবে। এছাড়াও যদি সিস্টাইটিস severe ধরনের হয় এবং প্রস্রাবের সাথে রক্ত যায় তবে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সিস্টাইটিসের লক্ষণ দেখতে পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। গর্ভবতী মহিলাদের সিস্টাইটিস এর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে।
Cystitis এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
হোমিওপ্যাথিতে সিস্টাইটিস এর খুব সুন্দর ও নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা রয়েছে। অন্যান্য রোগের মতোই হোমিওপ্যাথির মূল নীতি অনুযায়ী কনস্টিটিউশনাল ট্রিটমেন্ট করতে হবে। লক্ষণ সাদৃশ্যে উপযুক্ত ঔষধ রোগীকে সূক্ষ্ম শক্তিতে ও ক্ষুদ্রতম মাত্রায় উপযুক্ত ডোজে রোগীকে প্রয়োগ করতে হবে।
কেন্ট রেপার্টরী অনুযায়ী cystitis এর জন্য বিবেচনাযোগ্য প্রধান ঔষধগুলোঃ
1st grade medicine:
Apis, Ars, Bell, Canth, Lac-c, Lach, Lyc, Puls, Sec, Sabina, Ter
2nd grade medicine:
acon, agn, arn, aur-m, aur, Bry, cact, carb-an, cham, coff, ham, hep, hyos, iod, lyss, merc, nux-v, phos, rhus-t, sabad, sep, sil, stram, sulph, verat-v, verat
3rd grade medicine:
alum, bufo, calc, carb-s, caul, chin, cocc, coloc, con, croc, ferr-ar, ferr, graph, hydr, hyper, ing, ip, iris, kali-c, kali-p, kreos, mag-m, op, ph-ac
(এছাড়াও রোগীর ধাতুগত লক্ষণ সাদৃশ্যে অন্যান্য যে কোন ঔষধই আসতে পারে সিস্টাইটিস রোগের ক্ষেত্রে।)
Cystitis এর ব্যবস্থাপনাঃ
যদি আপনার সিস্টাইটিস এর সমস্যা প্রকাশ পেয়ে থাকে অথবা ক্রনিক আকারে বারে বারে প্রায়ই সিস্টাইটিস এ আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থেকে থাকে তবে নিম্নোক্ত ব্যবস্থাপনা মেনে চলুন।
১) মূত্রদ্বার (urethra) সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। প্রতিবার প্রস্রাবের পর পানি দিয়ে যৌনাঙ্গ ধুয়ে ফেলুন। সহবাসের পর যৌনাঙ্গ ধুয়ে ফেলুন।
২) যৌনাঙ্গে কেমাক্যাল যুক্ত সুগন্ধি ক্রিম ও পারফিউম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
৩) গর্ভনিরোধের জন্য ডায়াফ্রাম ব্যবহার না করে বরং অন্যান্য পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
৪) টাইট ফিটিং অন্তর্বাসের পরিবর্তে ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করুন।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সকল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের তালিকা